মহিলা সংরক্ষণ বিল গুরুত্বপূর্ণ কেন?

দেবজিৎ মুখার্জি: বিশেষ অধিবেশনের আগে রবিবার বিকেলে দিল্লিতে সংসদের গ্রন্থাগার ভবনে বসেছিল সর্বদলীয় বৈঠক। সেখানে বিরোধী দলগুলি মহিলা সংরক্ষণ বিল নিয়ে সরব হয়েছিল। ওই বিষয়ে দাবি তোলেন তৃণমূলের প্রতিনিধি ডেরেক ও ব্রায়েনও। সমস্ত বিরোধী দল বিশেষ অধিবেশন চলাকালীন মহিলা সংরক্ষণ বিল পাস করার পক্ষে সওয়াল করে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, মহিলা সংরক্ষণ বিল এতখানি গুরুত্বপূর্ণ কেন?

     

    গত ২৭ বছর ধরেই মহিলা সংরক্ষণ বিল নিয়ে আলোচনা হয়েছে সংসদের উভয়কক্ষে। যদিও শেষ পর্যন্ত তা পাশ করা যায়নি। ১৯৯৬ সালে এইচডি দেবগৌড়ার নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট সরকার মহিলা সংরক্ষণ বিল বাস্তবায়নের কথা বলেছিল। সেবার মহিলার সংসদ এবং বিধায়কদের জন্য ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণের দাবি উঠেছিল। যদিও এই বিল পাশ হওয়ার আগেই দেবগৌড়ার সরকার বিদায় নেয়। পরবর্তীকালে অটল বিহারী বাজপেয়ী সরকার আমলেও প্রসঙ্গ উঠলেও বিল পাশ করা যায়নি। প্রথমবার মনমোহন সিং সরকার ২০১০ সালে রাজ্যসভায় মহিলা সংরক্ষণ বিল পাস করেছিল। কিন্তু লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাবে এই বিলটি আটকে যায়।

     

    উল্লেখ্য, দেশে মহিলা ভোটারের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো হারে বাড়লেও, এমনকী তা সরকার বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখলেও লোকসভার উভয়কক্ষে তাঁদের উপস্থিতি সামান্যই। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে মাত্র ৭৮ জন মহিলা সাংসদ পেয়েছে পার্লামেন্ট। রাজ্যসভায় ২৫০ জন সাংসদের মধ্যে মাত্র ৩২ জন মহিলা, অর্থাৎ মোটে ১১ শতাংশ। একইভাবে মোদি মন্ত্রিসভায় মহিলাদের উপস্থিতি ৫ শতাংশ।

     

    অথচ নির্বাচন কমিশনের ২০১৯ সালের তথ্য অনুসারে, ভারতের মোট ৯১ কোটি ভোটারের মধ্যে মহিলা ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৪৪ কোটি। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ৬৭.০২ শতাংশ পুরুষ এবং ৬৭.১৮ শতাংশ মহিলা ভোট দিয়েছেন। তামিলনাড়ু, অরুণাচল, উত্তরাখণ্ড এবং গোয়া সহ ১২টি রাজ্যে নারী ভোটাররা বেশি ভোট দিয়েছেন। যেখানে বিহার, ওড়িশা ও কর্ণাটকে উভয়ের ভোট প্রায় সমান।এই ১২টি রাজ্যে প্রায় ২০০টি লোকসভা আসন রয়েছে। এই পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে সংসদে মহিলা সংরক্ষণ বিল কতখানি গুরুত্বপূর্ণ।