|
---|
নিজস্ব সংবাদদাতা : বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল নিয়ে ডামাডোল অব্যাহত। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রমৃত্যুর পর বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলগুলিতেও অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। ‘এই সময়’-এ ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত প্রতিবেদনের পর সাত দিনের মধ্যে বহিরাগতদের হস্টেল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। যদিও সেই নির্দেশিকার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে। এসবের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি নিয়ে দানা বেঁধেছে বিতর্ক। অভিযোগ উঠেছে, ইউজিসি-র নির্দেশিকা অমান্য করে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির চেয়ারম্যান মনোনীত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য আশিস পানিগ্রাহী। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের একটি অংশের মতে, অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির চেয়ারম্যান হওয়ার অধিকারই নেই সহ উপাচার্যর।বৃহস্পতিবার বৈঠক হয়েছিল সহ-উপাচার্যর ঘরে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন ডিন, রেজিস্ট্রারের উপস্থিতিতে সহ-উপাচার্যকে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়। সে প্রসঙ্গে শুক্রবার সহ উপাচার্য বলেন, ‘মিটিং করে আমাকে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আগামী মঙ্গলবার আমরা কমিটির বৈঠক ডেকেছি।উপাচার্য না থাকায় এখন আমাকেই সব দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে।’ কিন্তু এ ভাবে চেয়ারম্যান নিয়োগ করা যায় না জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক বলেন, ‘এটা গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়লের মতো। মিটিংয়ে থাকা ব্যক্তিরা তো কেউ অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির সদস্যই নন। তাঁরা কী ভাবে ঠিক করবেন কে চেয়ারম্যান হবেন?রেজিস্ট্রার নিজেও তো এই কমিটির সদস্য নন। তিনিও কী ভাবে এতে মত দিলেন?’ আর এক অধ্যাপকের বক্তব্য, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন কোনও উপাচার্য নেই। তাতে বহু সমস্যার মুখে পড়তে হয়।পরিচালন কমিটি, কোর্ট মিটিং, ফ্যাকাল্টি, জয়েন্ট ফ্যাকাল্টি, বোর্ড অফ রিসার্চ স্টাডি, পিএইচডি অ্যাওয়ার্ডি, ফিনান্স- সমস্ত বিভাগে বহু কাজ আটকে। তাহলে এসব ক্ষেত্রে সহ উপাচার্য দায়িত্ব পালন করছেন না কেন? বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রারের ভূমিকা কার্যত সিইও-র। তিনিই কমিটিতে নেই আর সহ উপাচার্য হয়ে গেলেন কমিটির চেয়ারম্যান!’ এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার সুজিত চৌধুরী বলেন, ‘শুধু এটুকু বলতে পারি, এভাবে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি তৈরি করা যায় না।’জলঘোলা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের নিয়ে পুলিশ সুপারের সেমিনার করার ইচ্ছা নিয়েও। হস্টেল ঘিরে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে তা নিয়ে আগামী সোমবার পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন নিজে উদ্যোগী হয়ে বৈঠক করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথমে তা নিশ্চিত করা হলেও এখনও সেমিনারের নোটিফিকেশন জারি করা হয়নি।জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘আসলে এসপি স্যার বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন বহু তথ্য পেয়েছেন, যা কোনও ভাবে প্রকাশ্যে চলে এলে কিছু ছাত্রনেতার সমস্যা হতে পারে। তেমনই কারও ইন্ধনে হয়তো সহ উপাচার্য চান না এই সেমিনার হোক।’ এ বিষয়ে সহ উপাচার্য বলেন, ‘একেবারে মিথ্যা রটনা। বৈঠকের জন্য নির্দেশিকা জারি করতে আমি রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দিয়েছি। এখন কোনও সমস্যা হলে সেটা ওঁর কাছে জানতে চান।’