বিজেপি শকুনের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চলেন মন্তব্য রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের

নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক: রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘বিজেপি শকুনের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চলছে। তারা ভাগাড়ের মৃতদেহ খুঁজে রাজনীতি করার চেষ্টা করছে।’ সম্প্রতি চুরির অভিযোগে পুলিশের হাতে ধৃত ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরের থানা লকআপে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। ওই ঘটনায় বিজেপি রাজনৈতিক ময়দান উত্তপ্ত করার চেষ্টা করায় তিনি আজ শনিবার গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই মন্তব্য করেন।

     

    গত বৃহস্পতিবার বীরভূম জেলার মল্লারপুরের বারুইপাড়ার শুভ মেহেনা (১৪) নামে এক কিশোর চুরির অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। ওইদিন গভীর রাতে থানার লকআপে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় ধৃত কিশোরের। বিজেপি’র দাবি, পুলিশ লকআপে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে তাকে। পরিবারের লোকজন প্রথমে শুভ মেহেনাকে পুলিশ পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করলেও পরে বয়ান পরিবর্তন করে সে আত্মহত্যা করেছে বলে জানান।

     

    যদিও ওই ইস্যুতে শনিবার বিজেপি মল্লারপুর বনধের ডাক দেয়। বনধে দোকানপাট বন্ধ থাকলেও বিজেপি নেতা সৌমিত্র খাঁ এমপি’র নেতৃত্বে সেখানে প্রতিবাদ মিছিল, থানা ঘেরাও কর্মসূচিকে কেন্দ্র পুলশের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের ধস্তাধস্তিতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশি ব্যারিকেড ভাঙতে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে সড়কে ধর্না-অবস্থানে বসে পড়েন বিজেপি সমর্থকরা।

     

    বিজেপি নেতা সৌমিত্র খাঁয়ের দাবি, মৃত ওই কিশোর বিজেপি’র সমর্থক ছিল। কিন্তু মৃতের পরিবারের দাবি, সে তৃণমূল সমর্থক ছিল।

     

    এ ব্যাপারে আজ রাজ্যের তৃণমূল নেতা ও কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘যে মারা গেছে সে রাজনৈতিক কোনও কর্মসূচিতে মারা যায়নি। তাকে নিয়ে যে রাজনীতি করা হচ্ছে তা অত্যন্ত ঘৃণ্য ব্যাপার। এখন তো দেখছি এদের দৃষ্টিভঙ্গিটা শকুনের দৃষ্টির মত হয়ে গেছে! এবং ভাগাড়ে কোথায় কোন মৃতদেহ পড়ে আছে সেটা যেমন তারা খুঁজে বেড়াচ্ছে, ঠিক একইভাবে শ্মশানে ক্যাম্প খুলে বসে যাবে, যে বা যিনি যেভাবেই মারা যান না কেন তাতে রাজনীতির রঙ চাপিয়ে বিজেপি তার রাজনীতি করতে চাচ্ছে। তারা জানে যে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল রাজ্যে পুনরায় ক্ষমতায় আসবে।’

    অন্যদিকে, তৃণমূলের সিনিয়র নেতা ও সংসদ সদস্য অধ্যাপক সৌগত রায় আজ বলেন, ‘বিজেপি লাশের সন্ধানে আছে। যেখানেই কোনও লাশ পাচ্ছে ওরা ঝাঁপিয়ে পড়ছে! যে মারা গেছে, তার মা এবং বাবা দু’জনের বিবৃতি আমি শুনেছি। তারা বলেছেন যে হ্যাঁ তাদের ছেলে নেশাভান করত এবং সেজন্য চুরিটুরি করত। তারা মৃত্যুতে অত শোকপ্রকাশ করেননি। তার বাবা-মা দু’জনেই প্রকাশ্যে বলেছেন যে তারা তৃণমূল সমর্থক। কিন্তু এরপরেও বিজেপি লাফিয়ে পড়ছে! ওদের ওখানে স্থানীয় কোনও নেতা নেই। বিজেপি’র জেলা নেতাকে সেখানে দেখা যাচ্ছে। কোথায় বিষ্ণুপুর থেকে ঝাঁপিয়ে পড়েছে সৌমিত্র। বিজেপি যেকোনো জায়গায় যেকোনো মূল্যে অশান্তি সৃষ্টি করতে চাচ্ছে।’

     

    অন্যদিকে, বিজেপি নেতা সৌমিত্র খাঁ আজ বলেন, ‘১৪ বছরের ছেলেকে পুলিশ লকআপে হত্যা করা হল? যদি তার কোনও দোষ থাকে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন। কিন্তু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পিটিয়ে হত্যা করতে পারে কীভাবে? কারণ ওই পাড়াটা ও ওই গ্রামটা আমাদের বিজেপির সঙ্গে সংযুক্ত।’