বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু বেড়ে ২৯৫ ঘটনাস্থলে প্রধানমন্ত্রী রেলমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী।

লুতুব আলি, ৩ জুন : শুক্রবার উড়িষ্যার বালেশ্বরে রাত্রি আটটা নাগাদ এক মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনা র হলে পশ্চিমবঙ্গের ২৯৫ জন রেল যাত্রীর মৃত্যু ঘটে। আহত হান হাজার হাজার যাত্রী। এখনো অনেক যাত্রী নিখোঁজ হওয়ায় আত্মীয়-স্বজনেরা পাগলের মত খোঁজাখুঁজি শুরু করে দিয়েছেন। শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রেল মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণ এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। প্রধানমন্ত্রী, রেলমন্ত্রী বালেশ্বরের হাসপাতাল গুলিতে গিয়ে আহত যাত্রীদের তদারকি করেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এদিন কড়া জানান দোষী প্রমাণিত হলে চরম শাস্তি দেওয়া হবে। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কার্যের জন্য সব রকমের আশ্বাস দেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন রেলমন্ত্রী সামনেই রেলের গাফিলতির কথা তুলে ধরেন। রেল দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবার কিছু কেন্দ্র সরকার ১০ লক্ষ টাকা দেয়ার ঘোষণা করে। এদিন পশ্চিমবঙ্গের রাজ ভবন থেকেও মৃতদের পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার ঘোষণা করা হয়। এই ট্রেন দুর্ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের ৩১ জনের মৃত্যু হয়। আহত শতাধিক। পশ্চিমবঙ্গের সব থেকে মৃত্যু বেশি ২৪ পরগনা ও দ্বিতীয় স্থানে পূর্ব বর্ধমান। পূর্ব বর্ধমানের বর্ধমান দু’নম্বর ব্লকের বড়শুল, কাটোয়া, মঙ্গলকোট, মন্তেশ্বরের বেশ কিছু ব্যক্তির মৃত্যু হয়। কেউ চিকিৎসা করানোর জন্য আবার কেউ কাজের জন্য ট্রেনে করে যাতায়াত করছিল। মৃতদের বেশির ভাগই শ্রমিক শ্রেণীর মানুষ ছিলেন। উল্লেখ্য, এদিন উড়িষ্যার বালেশ্বরের বাহানগর স্টেশনে লুপ লাইনে একটি মালগাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল করমন্ডল এক্সপ্রেস কে পার করার জন্য সিগন্যাল থাকার জন্য করমন্ডল এক্সপ্রেস টি লুপ লাইনে ঢুকে পড়ে হলে করমন্ডল এক্সপ্রেসটির ইঞ্জিনসহ কামরাগুলি মাল গাড়ির উপরে চেপে পড়ে হলে ইঞ্জিন সহ ২১ টি কামরা দুমড়ে মুছরে দেশলাই য়ের ঠোলের ছিটকে পড়ে। এইরকমই মুহূর্তে বেঙ্গালুরু থেকে যশোবন্তপুর এক্সপ্রেস ওই একই লাইনের সমান্তরালে চলে হাওড়া গ্রামী যশোবন্তপুর এক্সপ্রেস এর চারটি বগি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। হাজার হাজার রেল যাত্রীর আর্তনাদে শুক্রবারের বালেশ্বরের রেল স্টেশনটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। হাওড়া গামী যশোবন্তপুর এক্সপ্রেস টি বিচ্ছিন্ন হওয়া চারটে বগিকে ফেলে রেখে যাত্রীদের হাওড়া স্টেশনে নিয়ে আসে। এদিন হাওড়া স্টেশনে যাত্রীরা এসে অভিযোগ করেন বালেশ্বরের স্থানীয় মানুষরা অনেকেই উদ্ধারের নামে নিহত আহত যাত্রীদের মালপত্র টাকা পয়সা চুরি করে নিয়ে পালায়। বালেশ্বর এর এই রেল দুর্ঘটনা ভারতের তিন দশকের বৃহত্তম রেল দুর্ঘটনা বলে অনেকে মন্তব্য করেন। দুর্ঘটনা স্থল থেকে অনেক আহত যাত্রীদের কলকাতায় এনে ভর্তি করানো হয়। অনেকে আশঙ্কা করছেন নিহতের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়ে পাঁচশ ছাড়িয়ে যেতে পারে।