বি জে পি সভাপতির হুশিয়ারি দলীয় নেতা কর্মীদের প্রতি ” সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করলে কড়া ব্যবস্থা”|

সাম্প্রদায়িকতার লাইন  থেকে কী বিজেপি  তাহলে সরছে?

    আর এস এস প্রধানের পর বি জে পি সভাপতির সতর্কতা

    বিমল মন্ডল

    সারাদেশে  যখন  করোনা সঙ্কট।মহামারি, মৃত্যু মিছিল  ঠিক  তখনই  গেরুয়া  শিবিরে সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল  ঝড়।

    তাহলে কি সাম্প্রদায়িকতার লাইন  থেকে বিজেপি  সরে আসতে  চাইছে? এমনই  একটি  ইঙ্গিত  মিলল বিজেপির  সভাপতি  জে পি নাড্ডার কথায়। সরাসরি  বিজেপির  ফ্রন্ট লাইনের উদ্দেশ্যে  তিনি হুঁশিয়ারী দিয়ে বলেছেন  “এমনটা  চলতে থাকলে দল তাঁকে  বহিষ্কার  করতে  বাধ্য  হবে। ”

    কিন্তু  দুদিন  আগে  অর্থাৎ  অক্ষয়তৃতীয়ায় নাগপুরের কর্মী  সভায় ভাষণ দিতে গিয়ে  সংঘ প্রধান  মোহন  ভাগবত  বলেছিলেন  “কোনো  একটি  ভুলের ঘটনার  জন্য গোটা  সম্প্রদায়কে দায়ী করা ঠিক হচ্ছে  না “। নাম না করে উল্লেখ  করেছিলেন  এবং বোঝাতে চেয়েছিলেন  যে মুসলিমদের যে ভাবে  করোনার প্রভাবে কোনঠাসা  করা  হচ্ছে মোদি  সরকারের  পক্ষ  থেকে, করোনা ভাইরাস  ছড়িয়ে  দেওয়ার  অপরাধে নিজামুদ্দিন  মার্চাযের আসা মুসলিম । করোনা আক্রান্ত দের নিয়ে যে ভাবে দায়ী  করা হচ্ছে দেশময়  করোনা ছড়িয়ে  দেওয়ার  জন্য । তার প্রতিবাদে তিনি মুখ খুলেছিলেন। ব্যাপারটা অবিশ্বাস্য  হলেও এটা সত্যি  যে বেশ কিছুদিন  ধরে বিজেপির  শীর্ষ  নেতৃত্বের মধ্যে মুসলিম  বিদ্বেষিনীতি  নীতি  থেকে সরে আসার ইঙ্গিত  পাওয়া যাচ্ছে। এর আগে মোহন ভাগবত  বলেছিলেন  ” মুসলমানদের  বাদ দিয়ে  দেশের  ইতিহাস  হয় না। দেশকে  ভাবা যায় না”।

    এই মর্মে  এই খবরটি বিশেষ  প্রনিধান যোগ্য। কারণ   খবরটি প্রকাশিত  হয়েছে  সোশ্যাল  মিডিয়া পোর্টাল  বলে পরিচিত ওয়ান  ইণ্ডিয়াতে। সেখান  থেকে  জানা যাচ্ছে  যে-

    ভারতীয় জনতা পার্টির  সভাপতি  জানিয়েছেন  ” দলের কোনো  কর্মকর্তা ও সদস্য  যদি  এখন  থেকে কোনো  রকম  বিভাজন  মূলক বা সাম্প্রদায়িক  মন্তব্য  করেন তবে তাঁর  বিরুদ্ধে  নেওয়া  হবে কড়া ব্যবস্থা  “।বিজেপির  সভাপতির এমন হুমকির  কারণ  কী?  তা  নিয়ে  বিরোধী  শিবিরে শোরগোল  পড়ে যায় সারা দেশ জুড়ে । ফলে  কেন্দ্রীয়  বিজেপি   নড়ে চড়ে বসে। কারণ  সম্প্রতি ঘটে  যাওয়া  উত্তর প্রদেশের  বিজেপির  এক বিধায়কের বিরুদ্ধে। একজন  মুসলিম  শাকসব্জি বিক্রেতাকে প্রকাশ্যে  হুমকি  দেওয়ার অভিযোগে  একটি ভিডিও  ভাইরাল হয়  তাতে অসন্তুষ্ট  হয়েছে জে পি নাড্ডা।তাই তিনি  এমন ভাবে  কঠোর  শাস্তির  সিদ্ধান্ত  নিয়েছেন ।

    সারাদেশের রাজনীতি  মহলের ধারণা  যে পার্টির  নিচুতলার  কর্মীদের  মনোবল  রক্ষা  করার জন্য  এবং বিরোধী  আক্রমণের ধার কমাতে বিজেপি  নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্ত ।

    গোটা  দেশে  কোভিড-১৯ মারণ  কামড়। ঠিক সেই মুহূর্তে   উত্তর প্রদেশের  বিজেপির  বিধায়ক  সুরেশ তেওয়ারির সাম্প্রদায়িক  মন্তব্য  ঘিরে বিরোধীদের সমালোচনা  গোটা  গেরুয়া  শিবিরে  চিন্তার  ভাঁজ  ফেলে দিয়েছে । আর সেই সময়ই  জে পি নাড্ডার এই সিদ্ধান্ত । তাতে বিরোধীদের  বলার আগে বিজেপি  বিধায়ক সুরেশ বাবুকে শোকজ নোটিশ  ধরিয়ে দিয়ে পরিস্কার  ভাবে  ঘোষণা  করেন  যে – সারা দেশে কোন  প্রকার বা কোনো  রকম  ভাবে সাম্প্রদায়িক   মন্তব্য  বরদাস্ত  করা যাবে না। সাম্প্রদায়িক  মন্তব্য  করলেই তাকে দল থেকে  বহিষ্কার  করা হবে।

    বিজেপির  সভাপতির এমন সিদ্ধান্ত  নিয়ে সমস্ত  রাজনৈতিক  দল  গুঞ্জন  শুরু  করে দিয়েছেন । এখন  দেখার বিষয়   যে সত্যিই কী  বিজেপি  সরকার   এই নীতি  কৌশল  প্রয়োগ  করবেন । না শুধু  রাজনীতির  জন্য। তা সময় বলবে। তাই সব বিরোধী দল  সেই দিকে তাকিয়ে।

    সংবাদ সৌজন্যে :বার্তা সাম্প্রতিক
    http://bartasamprotik.blogspot.com/2020/05/blog-post_5.html