|
---|
নিজস্ব সংবাদদাতা : শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে মামলা চলছে কলকাতা হাই কোর্টে। এরই মাঝে বীরভূমের সাঁইথিয়ায় সরকারপোষিত স্কুলে ‘কর্মখালি’ বিজ্ঞপ্তিকে কেন্দ্র করে বিতর্ক তুঙ্গে। স্কুলের তরফে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ভূগোল এবং শিক্ষা বিজ্ঞানের জন্য অস্থায়ী এবং আংশিক সময়ের জন্য যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ হবে। মাসিক চুক্তিতে এর সাম্মানিক হবে ১,৫০০ টাকা। আর এই বিজ্ঞপ্তি সামনে আসতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা ঠিক কোন জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে এবং কোন পরিস্থিতিতে পৌঁছে স্কুল কর্তৃপক্ষকে মাত্র ১,৫০০ টাকার মাসিক চুক্তিতে শিক্ষক নিয়োগ করতে হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জেলার শিক্ষা মহলের একাংশ। দীর্ঘ দিন এসএসসি পরীক্ষা বন্ধ। স্কুল নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে একাধিক মামলা চলছে আদালতে। তা হলে সরকারি এবং সরকারপোষিত স্কুলগুলিতে কি এ ভাবেই নামমাত্র ‘সাম্মানিক’-এ বেসরকারি পদ্ধতিতে শিক্ষক নিয়োগ হবে? এই প্রশ্নও উঠছে।অন্য দিকে, এই নামমাত্র পারিশ্রমিকেও দু’জন চাকরিপ্রার্থীকে পড়াতে রাজি হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দীপিকা সরকার নামে এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘‘খবর পেলাম শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে। তাই আবেদন করতে এলাম।’’ তার পর হেসে ওই চাকরিপ্রার্থী বললেন, ‘‘১,৫০০ টাকা দেবে বলেছে। কিন্তু এখন তো শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে না। তাই…’’এ নিয়ে শোভন মণ্ডল নামে ওই স্কুলের শিক্ষক বলেন, ‘‘দু’মাস আগে দুই শিক্ষক ট্রান্সফার নিয়ে অন্য স্কুলে চলে গিয়েছেন। তাই স্কুল পরিচালন সমিতির বৈঠকে ঠিক হয় দু’জন শিক্ষক নেওয়া হবে।’’ তবে বিষয়টি শিক্ষা দফতরকে তাঁরা অবগত করবেন।
কিন্তু কেন এত কম পারিশ্রমিক দেওয়া হচ্ছে? এ নিয়ে পরিচালন কমিটির সভাপতি জ্যোতির্ময় মণ্ডল বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে বেশ কয়েকটি শূন্যপদ রয়েছে। আমাদের পিছিয়ে পড়া এলাকা। ছেলেমেয়েদের যাতে ১০ কিলোমিটার দূরে সাইকেল চালিয়ে অন্য স্কুলে না যেতে হয়, তাই শিক্ষকের অভাব দূর করার চেষ্টা করেছি। কিছু শিক্ষানুরাগী ছেলেমেয়েকে যদি একটা সাম্মানিক দিয়ে আনতে পারি, তা হলে সুবিধা হয়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এটা বেতন নয়। আমাদের গরিব স্কুল। কোনও ফান্ড নেই। তাই যতটুকু পারছি, তাই দিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি। ২০২০ সালেও এ ভাবে নিয়োগ হয়েছিল।’’ এর সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘তবে নিশ্চিত করতে পারি, এখানে মেধার ভিত্তিতেই শিক্ষক নিয়োগ করব।’’