হোম টিউশন পড়িয়ে পড়াশুনা করে ডব্লিইবিসিএস পাশ করেন ইউসুফ হোসেন

রাজু আনসারী, সুতি : আর্থিক অস্বচ্ছলতাকে দূরে ঠেলে এবছর ডব্লিইবিসিএসে সফল হলেন মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ থানা এলাকার ভাসাইপাইকর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার এলিজাবাদ চিল্যাইমারী গ্রামের মোহাম্মদ ইউসুফ হোসেন। সদ্য প্রকাশিত ডব্লিইবিসিএসের গ্রুপ সি পদে সফল হয়ে ভূমি সংস্কার দপ্তরের এল আর ও হতে চলেছেন পিছিয়ে পড়া গ্রামীন এলাকার কৃতি ইউসুফ। তার এই সাফল্যের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়তেই খুশির জোয়ার গ্রামজুড়ে। খুশি পরিবারের সদস্যরাও। বাবা মা প্রয়াত হলেও ইচ্চা শক্তি আর মনের জেদের পড়াশুনা চালিয়ে সফলতার দ্বার প্রান্তে পৌঁছে নজির গড়েছেন ইউসুফ।

    জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জের বিড়ি শ্রমিক, রাজমিস্ত্রি এবং চাষী এলাকা ভাসাইপাইকর গ্রাম পঞ্চায়েতের এলিজাবাদ গ্রামের সন্তান মোহাম্মদ ইউসুফ হোসেন। বাবা মৃত হুমায়ুন আলী এবং মা রোকেয়া বিবি। চার ভাই এবং চার বোনের মধ্যে সকলের ছোট মোহাম্মদ ইউসুফ হোসেন। ২০০৮ সালে ভাসাই পাইকর হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং তারপরেই আল আমিন মিশন থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও পরে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন তিনি। একদিকে বাবা নাই, অন্যদিকে মাঝপথে মা মারা যাওয়ায় কার্যত দুশ্চিন্তার পাহাড় নেমে আসে ইউসুফ হোসেনের মাথায়। সেসময় থেকেই শুরু হয় ডব্লিইবিসিএসের প্রস্তুতি। একদিকে হোম টিউশনি অন্যদিকে প্রস্তুতি। পারিবারিক অনটন কে সামাল দিয়ে পড়াশুনা চালিয়েই ২০২০ সালের ডব্লিইবিসিএস পরীক্ষায় সফলতা লাভ করেন মোহাম্মদ ইউসুফ হোসেন। জেনারেল ক্যাটাগরিতে তার র‍্যাঙ্ক হয়েছে ১৪৮। ভাসাই পাইকর এলাকায় প্রথম কেউ ডব্লিইবিসিএস অফিসার হওয়ার খবরে স্বাভাবিক ভাবেই আনন্দের জোয়ার এলাকায়।

    ইউসুফ হোসেন জানান, চরম দারিদ্রতা। পড়াশুনা করতে গিয়ে মাঝেমধ্যেই হোঁচট খেতে হয়েছে। হোম টিউশনি করেই অর্থ যোগান দিয়ে পড়াশুনা করেছি। আজ সাফল্যে সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন সবচেয়ে বাবা মা। জীবনে চেষ্টার বিকল্প নেই। পিছিয়ে পড়া এলাকায় সর্বপ্রথম ডব্লিউবিসিএস অফিসার হওয়ায় খুশি।