|
---|
লুতুব আলি, নতুন গতি, ১২ আগস্ট : যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র স্বপ্নদ্বীপ কুন্ডুর মৃত্যুতে দোষীদের ফাঁসির দাবি : গ্রেফতার সৌরভ চৌধুরী। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের মেধাবী পড়ুয়া স্বপ্নদ্বীপ কুন্ডুর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে তার বাবা রামপ্রসাদ কুন্ডুর দাবি তোলেন দোষীদের ফাঁসি চান। রামপ্রসাদবাবু অভিযোগ তোলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরী নেতৃত্বে স্বপ্নদ্বীপকে খুন করা হয়েছে। স্বপ্নদ্বীপের রহস্য মৃত্যুতে রামপ্রসাদ বাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ প্রাথমিক তদন্তের পর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী মেদিনীপুরের বাসিন্দা সৌরভ চৌধুরীকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কলকাতা পুলিশের নগরপাল বিনীত গোয়েল ও শীর্ষ পুলিশ কর্তারা তাকে জেরার পর কথার মধ্যে অসংগতি ধরা পড়ায় পুলিশ সৌরভ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করেন। ১২ আগস্ট শনিবার আলিপুর আদালতে সৌরভ চৌধুরীকে তোলা হলে বিচারক ২২ আগস্ট পর্যন্ত তাকে পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। এ ব্যাপারে পুলিশও খুনের ধারা রুজু করেছে। রাজ্য মানবাধিকার কমিশনও স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পুলিশের কাছে ২৪ আগস্ট এর মধ্যে রিপোর্ট তলব করেছে। অভিযোগ : বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়া সম্পন্ন হয়ে গেলেও প্রাক্তনীরা এখানে থেকে যান। দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় গুলির অন্যতম যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। এই সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটায় অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এখানকার প্রাক্তনীরায় নবাগত ছাত্রদের ওপর রিগিং করার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেয়। নদীয়ার গ্রাম থেকে পড়তে এসে স্বপ্নদ্বীপ, সৌরভ চৌধুরীর খপ্পরে পড়ে যান। যে সমস্ত পড়ুয়ারা নাকি হোস্টেল পান্না তাদের আশ্রয় এর ব্যবস্থা করে থাকে সৌরভ চৌধুরী। পরে তিনি ই এই আশ্রয় দাতাদের ওপর ক্রমাগত নির্যাতন ও রিগিং এর নেতৃত্ব দেন। পুলিশ সৌরভ চৌধুরীর রিং এর ব্যাপারে অনেক সূত্র পেয়েছে। এখনো চারজন পুলিশের স্ক্যানারে আছে। এই ঘটনা ঘটায় রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও দোষীদের শাস্তি পাওয়ার কথা বলেছেন। স্বপ্নদ্বীপ কুন্ডুর রহস্য মৃত্যুর পর যে সমস্ত দিকগুলি সামনে আসছে সেগুলি হল : মৃত্যুর দিন রাত আটটা পর্যন্ত স্বপ্নদ্বীপ সুস্থ ছিলেন। কি এমন ঘটনা ঘটলো ঘন্টা তিনেকের মধ্যে নগ্ন অবস্থায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হোস্টেলের তিন তলা থেকে নগ্ন অবস্থায় পড়ে তার মৃত্যু ঘটলো ? হোস্টেলের মূল প্রবেশদ্বারে সিসিটিভি খোলা কেন ? এর আগেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে রিগিংয়ের কারণে চারজন ছাত্রকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। এই ঘটনার পরও কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্টি রিগিং সেল কেন নিষ্ক্রিয় ? ১১ আগস্ট হোস্টেল থেকে পুলিশ একটি ডাইরি উদ্ধার করেছে। স্বপ্নদ্বীপ কুন্ডু ও সৌরভ চৌধুরীর দুটি মোবাইল ফোন ই পুলিশ বাজার এত করেছে। এই ঘটনা ঘটার পর বেশ কিছু পড়ুয়া মুখ খুলেছেন। তাদের অভিযোগ : সৌরভ চৌধুরীর দাদাগিরি সীমা অতিক্রম করেছিল। নবাগত পড়ুয়াদের প্রাক্তনীরা ছোট ছোট করে চুল কাটার ও দাড়ি না রাখার নিদান দিত। স্বপ্নদ্বীপের মৃত্যুর অব্যহিত পর পুলিশ আরো সক্রিয় হয়ে তল্লাশি শুরু করেছে। এদিন লালবাজার শাখার হোমির সাইডের অফিসাররা স্বপ্নদ্বীপের রানাঘাটের মামার বাড়িতে গিয়ে হাজির হয়েছেন। সেখানেই স্বপ্নদ্বীপের মরদেহ পুলিশ নিয়ে গেছে। স্বপ্নদ্বীপ কুন্ডুর মা ও বাবার কাতর আর্জি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা ফাঁসি দিতে হবে। তবেই তাঁদের পুত্র স্বপ্নদ্বীপ কুন্ডুর আত্মার শান্তি ঘটবে।