|
---|
স্টাফ রিপোর্টারঃ পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল লোকসভার জামুড়িয়া বিধানসভার খনি-শিল্পাঞ্চলের প্রাচীন গ্রাম নিমশায় দালান পীর সাহেবের মাজারে মিলাদ এ মেহফিল অনুষ্ঠিত হল। প্রধান উদ্যোক্তা লাল্টু কাজী জানান, দীর্ঘকাল পরে সংস্কারের কারণে গ্রামের মানুষের সহযোগিতায় মিলাদ এ মেহফিল অনুষ্ঠিত হয়।সৈয়দ শাহ্ গোলাম আলী (রহ.) ৩২৫ বছর পূর্বে সুদূর আরবের ভূমি থেকে ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানে পরিভ্রমণ করে নিমশায় অবস্থান করেন বলে জনশ্রুতি। ভারতবর্ষের সালতানাৎ তখন সম্রাট আওরঙ্গজেব আলমগীরের হাতে। বাংলায় মুর্শিদকুলি খাঁ নিজেকে স্বাধীন নবাব বলে ঘোষণা না করলেও তিনিই কার্যত শাসনকর্তা। দিল্লির বৃদ্ধ সম্রাট আওরঙ্গজেব আলমগীর তখন বিদ্রোহ দমনে দাক্ষিণাত্যে অবস্থান করছেন। মুঘল সাম্রাজ্যের সুবর্ণ যুগের অন্তিম লগ্ন দরজায় কড়া নাড়ছে। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে উপস্থিত হয়েছেন সম্রাট। আঞ্চলিক স্বাধীনতার আওয়াজ উঠেছে একের পর এক প্রান্তে। একদিকে ছত্রপতি শিবাজীর নেতৃত্বে মারাঠা শক্তির রাজকীয় উত্থান। অন্যদিকে বিজাপুর গোলকুন্ডায় সুন্নাহ্ বিরোধী শিয়া শক্তির লালকার, পুরো ব্যবস্থাটাকেই টালমাটাল করে তুলেছে । জিজিয়া কর সাম্রাজ্যের অভ্যন্তরে অসন্তোষ বাড়িয়ে তুলেছে । সম্রাট আওরঙ্গজেব আলমগীর দীর্ঘ সময় রাজধানীতে না থাকার কারণে দরবারের শৃঙ্খলাও হয়েছে বিঘ্নিত । সাম্রাজ্যের অরাজকতার অবসানে এই সময় ঐসলামিক শান্তির বার্তা নিয়ে উপস্থিত হন বহু সুফি সাধক। হযরত সৈয়দ শাহ্ গোলাম আলী (রহ.) এর আগমন সেই সঙ্কটময় মুহূর্তে বলে প্রচলিত ধারণা।
নিমশার দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থান করেন হযরত সৈয়দ শাহ্ গোলাম আলী (রহ.) । সেখানে একটা পুরাতন দালান বাড়ি ছিল বলে স্থানীয় মানুষ তাঁকে দালান পীর বলে থাকেন। বিশিষ্ট সমাজসেবী কাজী আনোয়ারুল ইসলাম (লাল্টু কাজী) বলেন, তাঁকে নিমশা মসজিদের প্রাক্তন ইমাম আলহাজ্ব হাফিজ সৈয়দ সদুরুদ্দিন আহমেদ বলেছেন , এখানেই পীর সাহেবকে সমাধিস্থ করা হয়। জানা যায়, উপযুক্ত তথ্যসূত্র না থাকার কারণে হযরতের জন্ম ও মৃত্যু সম্পর্কে স্থানীয় মানুষের কোনও ধারণা নেই। এক ভাব গম্ভীর পরিবেশে দরগায় মিলাদ এ মেহফিল অনুষ্ঠিত হয় । মানুষের ব্যাপক যোগদানে অনুষ্ঠান উৎসবের আকার ধারণ করে।