|
---|
লুতুব আলি, নতুন গতি : দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবার সোনাগাঁ র ভূমিপুত্র দীপঙ্কর বর্মন চরম দারিদ্র সংকটকে উপেক্ষা করেও সাহিত্যচর্চা করে চলেছেন। তাঁর প্রধান জীবিকা মাছ ধরা। সুন্দরবনের ভয়াল ভয়ংকর নদীতে মাছ ধরতে চলে যান জীবনের বাজি রেখে। জলে কুমির, ডাঙ্গায় বাঘের চোখ রাঙানি র সঙ্গে মোকাবিলা করতে হয়। কখনো পনের দিন আবার কখনো ও এক মাস নদীতেই কাটাতে হয়। রাতে নৌকা ভিড়িয়ে সাহিত্যচর্চা করেন নদীতেই। তিনি এক অভিনব ছন্দ রীতি প্রণয়ন করে বাংলার সাহিত্য ভান্ডার কে সমৃদ্ধ করেছেন। তাঁর সৃষ্টি করা ছন্দ রীতি গুলি হল : তীর্যক, চতুরঙ্গ, নয়ছয়, শব্দ দর্পণ, বিশে বিশ। দীপঙ্কর বাবুর সৃষ্টি করা এই ছন্দ গুলি এখন অনেক লেখক লেখিকা অনুসরণ করে চলেছেন। ছোটবেলা থেকেই বাংলা সাহিত্যের প্রতি তাঁর দুর্দমনীয় ভালবাসার টান লক্ষ্য করা যায়। দীপঙ্কর বাবুর সম্পাদনায় নিয়মিত প্রকাশ হয় সৃষ্টি সুধা সাহিত্য পত্রিকা। সুন্দরবনের নদীগুলির প্রকৃতি ও গতিপথ দীপঙ্কর বাবু এক লহমায় বর্ণনা দিতে পারেন। নদীগুলি একদিকে যেমন সৃষ্টিশীল অন্যদিকে সমস্ত কিছু তছনছ করে কেড়ে নিয়ে মহাসমুদ্রের দিকে চলে যায়। নদীর কান্না শুনতে শুনতেই দীপঙ্কর বাবু অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এ প্রসঙ্গে দীপঙ্করবাবুর লেখা একটি কবিতার কিছু লাইন গুলি হল : এ কূল ও কূল দু কূল ভাঙিস, নিজের মতো তুই তো চলিস, ধ্বংস করেই করিস ভূমিক্ষয় ; তোর কারণে পাই যে ব্যথা গরিব-দুখী জন। ….. সাদ করে সব ঘর বাঁধেরে, তোর তটেতেই রয়, তোর বুকেতে জীবন চালায়, তোর বুকেতে লয়। তোর থেকে নেয় জীবনী জল, টলমলে জীবনের পল, ধ্বংস হয়েও তবু তো পায় সুখ, জীবন মরণ সবই বরণ জীবন মৃত্যু ক্ষন।