উত্তরপ্রদেশ থেকে অপমানিত, লাঞ্ছিত হওয়ার জন্যই বাংলায় চলে এসেছিলেন শামি

দেবজিৎ মুখার্জি: ভারতীয় ক্রিকেটে মহম্মদ শামির অবদান সবাই জানে। সদ্য সমাপ্ত বিশ্বকাপে টিম ইন্ডিয়ার তারকা জোরে বোলারের পারফরম্যান্সে গোটা দুনিয়া মুগ্ধ। এমন প্রেক্ষাপটে এক আনটোল্ড স্টোরি শোনালেন ‘সহেসপুর এক্সপ্রেস’। স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন যে জন্মস্থান উত্তরপ্রদেশ থেকে অপমানিত, লাঞ্ছিত হওয়ার জন্যই তিনি বাংলায় চলে এসেছিলেন।

    এই বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বৈষম্যের মারাত্মক অভিযোগ তুলে দিলেন শামি। তাঁর দাবি, ‘খুব কম বয়সে উত্তরপ্রদেশে দুবার ট্রায়াল দিয়েছিলাম। ভালো পারফর্ম করলেও, ফাইনাল রাউন্ড এলেই উত্তরপ্রেদেশের কর্তারা আমাকে লাথি মেরে বাইরে বার করে দিতেন। ওদের আচরণে বুঝে যেতাম যে আমার সেখানে কোনও দরকার নেই।”

    এই প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে আরও একটি ঘটনা সামনে নিয়ে আনেন। শামি ফের যোগ করেন,”একবার প্রায় ১৬০০ ছেলে এসেছিল ট্রায়ালে। তিন দিন ধরে সবাইকে দেখে রঞ্জি ট্রফির দল তৈরি করার কথা ছিল। আমার সঙ্গে সবসময় দাদা থাকত। সেবারও আমার পারফরম্যান্স ভালো ছিল। তবুও সুযোগ আসেনি। বরং এক কর্তা আমার দাদাকে ডেকে বলেছিলেন, ‘তোমার ভাই যদি আমার চেয়ার নাড়িয়ে দিতে পারে, তাহলে সুযোগ মিলবে।’ আমার দাদা সেই কথা শুনে ভেঙে পড়েছিল। আমরা অপমানিতবোধ করেছিলাম। এবং তখনই ঠিক করেছিলাম যে যাই হয়ে যাক উত্তরপ্রদেশের বিরুদ্ধে আর খেলব না।”

    উত্তরপ্রদেশে ক্রিকেটে হাতেখড়ি হলেও ক্লাব ক্রিকেট খেলার জন্য শামি বেছে নিয়েছিলেন কলকাতা ময়দানকে। বাংলার হয়েই খেলেন ঘরোয়া ক্রিকেট। খেলার জন্য বছরের একটা বড় সময় থাকেন কলকাতাতেই। এর পর ২০১০ সালে ইডেন গার্ডেন্সে অসমের বিরুদ্ধে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল তাঁর। যদিও এবারের কাপযুদ্ধে ভালো পারফরম্যান্স করার জন্য উত্তরপ্রদেশেও স্বীকৃতি পাচ্ছেন তিনি। তাঁর গ্রামে একটা ক্রিকেট স্টেডিয়াম তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। বিশ্বকাপ ফাইনালের পর শামিকে বুকে টেনে নিয়ে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে এত সাফল্যের পরেও নিজের কষ্টের দিনগুলোর কথা ভুলতে পারছেন না ‘সহেসপুর এক্সপ্রেস।’