শিক্ষকের ডাকে ৯০ কিলোমিটার মোটরসাইকেল চালিয়ে রক্ত দিতে পৌঁছে গেল ছাত্র

শিক্ষকের ডাকে ৯০ কিলোমিটার মোটরসাইকেল চালিয়ে রক্ত দিতে পৌঁছে গেল ছাত্র

    নতুন গতি,চন্ডিপুর: লকডাউন এ মুমূর্ষু মানুষের পাশে দাঁড়াতে সদা সতর্ক দৃষ্টি রেখেছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘চলো পাল্টাই’ সারা লকডাউন এ ৭২ জন রক্তদাতা সরাসরি ব্লাড ব্যাংক এ গিয়ে রক্ত দান করেছেন । আজ হাসচড়া এম ডি স্কুলের অডিটোরিয়াম হলে সেচ্ছাসেবী সংগঠন চলো পাল্টাই ও রবীন্দ্র পরিষদ চন্ডিপুরের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো গ্রীষ্মকালীন রক্তের চাহিদা মেটাতে রক্তদান শিবির। এই রক্তদান শিবিরে ৪৩ জন রক্তদাতা উপস্থিত হন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পশ্চিম মেদিনীপুর দাসপুর থেকে শিক্ষকেরাও হানে ৯০ কিলোমিটার বাইক চালিয়ে পৌঁছে গেলেন দাসপুর পশ্চিম মেদিনীপুরের সৌম্য দত্ত রক্ত দিতে। লক্ষ্য একটাই মানুষের প্রাণ বাঁচাতে হবে। হবিচক নাটকের পটুয়া শিল্পীরাও পিছিয়ে নেই কারোর বাড়ীর চাল উড়ে গেছে, কেউ বা প্রাণ শিবিরে এখনো আশ্রিত কিন্তু তাদের মধ্যেও দেখা গেল রক্তদানের জোয়ার পট শিল্পীদের কুড়িজন রক্তদাতা আজ পৌঁছে গিয়েছিলেন রক্তদান শিবিরে। আজকের রক্তদান শিবিরে রক্তদান কারী হিসেবে মহিলাদের সংখ্যা কম ছিল না। মায়ের মমতা ও ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আজকের রক্তদান শিবির সাফল্যমন্ডিত হল নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল ব্লাড ব্যাংকের সহযোগিতায়। এই মহতী কর্মযজ্ঞে উপস্থিত ছিলেন চন্ডিপুর সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক শ্রী অভিষেক দাস, ওসি – ইমরান মোল্লা
    , জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ – ডা. পার্থপ্রতিম দাস, হাসচড়া এমডি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বিধানচন্দ্র ধারা এছাড়াও আরও অনেকে। চলো পাল্টাই সংগঠনের সহ সভাপতি শ্রী অরুণাংশু বাবু বলেন, বর্তমানে আম পানের তাণ্ডব ও করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের জেরে এলাকায় যে পরিমাণ রক্তদান শিবির সংগঠিত করা যেত তা বর্তমানে অসম্ভব হয়ে উঠেছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে মানুষকে সচেতন করে রক্তদান শিবির সংগঠিত করার উদ্যোগী হতে হবে এলাকার সমস্ত সংগঠকদের। তা না হলে অনেক মুমূর্ষু মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়তে হবে। রক্তের চাহিদা মেটাতে ইতিপূর্বেই হলদিয়া চৈতন্যপুর এলাকাতে রক্তদান শিবির সংগঠিত করা হয়েছে , আগামী ১২ জুন হলদিয়া টাউনশিপ আরো একটি রক্তদান শিবির আমরা সংগঠিত করতে চলেছি।
    রবীন্দ্র পরিষদের সম্পাদক প্রতীক জানা বলেন, আজকের এই রক্তদান শিবির কেবল মানুষের জন্যে নয় প্রকৃতির জন্যে কারণ সকল রক্ত দাতা কে তুলে দেওয়া হল চারা গাছ ও করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে মাক্স, স্যানিটাইজার। জীবনের মূল্যবান দানের পাশাপাশি পরিবেশের প্রতি দায়িত্ব পালন করাটিও জরুরী।
    নন্দীগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংগঠনের অন্যতম সদস্য সৈকত শাসমল জানান, আমাদের শুভানুধ্যায়ী সদস্যরা সরাসরি ব্লাড ব্যাংকে গিয়ে তো রক্ত দান করছে নি কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্তের জোগান দিতে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে আমরা এই রক্তদান শিবির সংগঠিত করতে চলেছি। সাধারণ মানুষ থেকে ক্লাব সংঘ প্রতিষ্ঠান সকলকেই এ বিষয়ে আরও সচেতন হওয়া উচিত এবং সকলকেই জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এগিয়ে আসা উচিত।