বড়শুল কিশোর সংঘের কার্যকরী কমিটি এই অসহায় পরিবারগুলির পাশে দাঁড়ান।

সেখ সামসুদ্দিনঃ পূর্ব বর্ধমানে বড়শুল বাসরুটে গীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্তকাল ধরে সারাবছর প্রতিদিন ভোর ৪ টে থেকে রাত্রি ১০ টা পর্যন্ত নিজেদের পরিবারের সদস্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন থেকে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষদের যারা বাসের পরিষেবা দেন এরকমই বড়শুল এলাকারই ৩২ জন ড্রাইভার, কনট্রাক্টার ও ক্লিনার মিলিয়ে অস্থায়ী বাসকর্মীগন লকডাউন চলার জন্য কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। আজ বাসকর্মীবৃন্দগন তাদের নিজেদের সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্য -সদস্যাগণদের রোজ দুবেলা দুমুঠো অন্ন তুলে দেওয়ার জন্য আজ বহু মানুষের দরজায় দরজায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন ও দরবার করছেন. এই মূহুর্তে তাদের পাশে নেই বাসের মালিকগণও। বড়শুল কিশোর সংঘের দায়িত্বশীল সম্মানীয় পদাধিকারিক ব্যক্তিগন এই খবর পাওয়া মাত্র বাসকর্মীগণদের কয়েকজনের সাথে যোগাযোগ করেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের পারিবারিক অবস্থার খোঁজ খবর নেন। বড়শুল কিশোর সংঘের কার্যকরী কমিটির সম্মানীয় পদাধিকারিক ব্যক্তিগণ তড়িঘড়ি টেলি কনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেন এই অসহায় পরিবারগুলির পাশে দাঁড়াতে হবে। তাই গতকাল বিকাল ৫ ঘটিকায় ক্লাবের মাঠে অস্থায়ী বাসকর্মীগণদের হাতে ক্লাবের সাধ্যমতো কিছু খাদ্য সামগ্রী চাল-৫ কেজি, আলু – ২ কেজি, চিঁড়ে – ২৫০ গ্রাম, সর্ষের তেল – ২০০ গ্রাম, পিঁয়াজ – ৫০০ গ্রাম, সোয়াবিন ১৫০ গ্রাম, সাবান – ১টি তুলে দেওয়া হয়। উপস্থিত ছিলেন বর্ধমান উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তথা বর্ধমান উত্তর ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নিশীথ কুমার মালিক সহ বড়শুল কিশোর সংঘের পদাধিকারিক ব্যক্তিগণ। বিধায়ক নিশীথ কুমার মালিক জানান আমার উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে বড়শুল কিশোর সংঘ কোভিড -১৯ প্রতিরোধের জন্য লকডাউন থাকায় ক্লাবের সদস্যরা যেভাবে প্রশাসনের পাশে আছে এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে অসহায় দুঃস্থ মানুষদের পাশে থাকার জন্য যে সব মানবিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তার জন্য আমি বড়শুল কিশোর সংঘের সকল সদস্য-সদস্যাগণদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। এই ক্লাব সারাবছর ধরে এলাকার দুঃস্থ মানুষদের শীতবস্ত্র, হুইলচেয়ার, ক্রাচ, শাড়ি, শিশুদের জামা, বিছানার চাদর বিতরণ করে থাকে. এখনো পর্যন্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবেদনে সাড়া দিয়ে এই ক্লাব পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য আপৎকালীন ত্রাণ তহবিলে পূর্ব বর্ধমান জেলার জেলাশাসক মাননীয় বিজয় ভারতী-র হাতে ১০,০০১.০০ (দশ হাজার এক) টাকার চেক তুলে দিয়েছে। এছাড়াও আমার বিধানসভার গরীব সাধারণ জনগণের জন্য ৫০০ পিস মাক্স বিধায়কের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বড়শুল ব্লক হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সদের জন্য ২৫ পিস মাক্স ও ১ লিটার হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও বড়শুল ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের আশা কর্মী, ভি.আর.পি কর্মীদের জন্য ২৫ পিস মাক্স ও ১ লিটার হ্যান্ড স্যানিটাইজার এই ক্লাবের পক্ষ থেকে তুলে দেওয়া হয়। এলাকার ৬০ জন দুঃস্থ পরিবারের হাতে ৩ কেজি চাল ও ২ কেজি করে আলু তুলে দেয়া হয়। বর্ধমান উত্তর বিধানসভায় বড়শুল কিশোর সংঘ একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র। এর জন্য এলাকার বিধায়ক হিসাবে গর্ব বোধ করেন নিশীথবাবু। আগামী দিনেও যেনো এই ক্লাব এই ভাবেই মানুষের সেবায় সর্বক্ষণ নিয়োজিত থাকে, এলাকার বিধায়ক হয়ে এই ক্লাবের পাশে আছেন। বড়শুল কিশোর সংঘের সাধারণ সম্পাদক পার্থ ঘোষ বলেন লকডাউন যদি অনেকদিন ধরে চলতে থাকে তাহলে বড়শুল কিশোর সংঘ বড়শুল এলাকার পাড়ায় পাড়ায় ধাপে ধাপে আনুমানিক ৫০০ পরিবারের হাতে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেবে। ক্লাব প্রথম থেকেই নভেল করোনা ভাইরাস নিয়ে এলাকায় সচেতনতার বার্তা নিয়ে মাইকিং এর মাধ্যমে প্রচার করে যাচ্ছে। এছাড়াও ব্যানার, পোষ্টার ও লিফলেট বিলির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে জনসচেতনতার প্রচার করে চলেছে। তাছাড়াও বড়শুল কিশোর সংঘের নিজস্ব অফিসিয়াল ফেসবুক প্রোফাইলে লাগাতার করোনা ভাইরাস সম্পর্কিত সচেতনতার বার্তা দিয়ে পোষ্ট করা হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এলাকার দায়িত্বশীল সেচ্ছাসেবী সংগঠন হিসাবে অসহায় দুঃস্থ পরিবারগুলির পাশে দাঁড়ানোর জন্য ক্লাব প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তার জন্য ক্লাবের সদস্য-সদস্যারা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বড়শুল কিশোর সংঘ মানুষের পাশে ছিলো, আছে ও থাকবে বলে জানান সম্পাদক।