ধার দেওয়া টাকা ফেরত চাওয়ায় সহকর্মীকে খুন! পরিচয় গোপন রাখতে মুখে ও গোটা শরীরে ঢেলে দিল অ্যাসিড

নিজস্ব সংবাদদাতা : ধার দেওয়া টাকা ফেরত চাওয়ায় রেলের এক মহিলা কর্মীকে খুন করল তাঁর সহকর্মী। শুধু তাই নয়, খুন করার পর মৃতের পরিচয় গোপন রাখতে মহিলার মুখে ও গোটা শরীরে অ্যাসিড ঢেলে দিল অভিযুক্ত। ঘটনাটি ঘটেছে নয়া দিল্লিতে। শনিবার নয়ডা সেক্টর ১৪৮ মেট্রো স্টেশনের কাছ থেকে ওই মহিলার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই অভিযোগে পুলিশ রেলের ওই কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতের নাম মহম্মদ জাকির। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলা দিল্লির নিজামুউদ্দিন রেল স্টেশনে কর্মরত ছিলেন। অন্যদিকে, টেকনিশিয়ান পদে কর্মরত অভিযুক্ত জাকির। ৪৫ বছর বয়সী ওই মহিলা ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে ঋণ নিয়ে জাকিরকে ১১ লক্ষ টাকা ধার দিয়েছিলেন। জাকির তাঁকে নির্দিষ্ট সময়ে টাকা পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু, সময় মতো টাকা ফেরত না পাওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েন ওই মহিলা। তিনি জাকিরের কাছে বারবার টাকা ফেরত চাইতে থাকেন। দিল্লি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (দক্ষিণ) চন্দন চৌধুরী জানান, টাকা না পাওয়ার ফলে মানসিক চাপে ছিলেন ওই মহিলা। এরপর ৮ সেপ্টেম্বর আচমকা নিখোঁজ হয়ে যান মহিলা। ঘটনায় তাঁর মেয়ে আম্বেদকর নগর থানায় একটি নিখোঁজের ডায়েরি করেন। এর পরে ৯ সেপ্টেম্বর রাত ৮ টার দিকে গ্রেটার নয়ডার নলেজ পার্ক থানা এলাকায় মহিলার মৃতদেহ খুঁজে পায় পুলিশ। ঘটনায় আম্বেদকর নগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।পুলিশ তদন্তে জানতে পারে ৮ সেপ্টেম্বর দুপুর ২ টোর দিকে মহিলা অফিস থেকে বের হয়েছিলেন। তখন অভিযুক্ত তাঁকে নলেজ পার্ক থানা এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে নির্জন জায়গায় তাঁকে ছুরি দিয়ে বেশ কয়েকবার আঘাত করে হত্যা করে জাকির। এরপর মহিলাকে যাতে চেনা না যায় তারজন্য তাঁর মুখে এবং শরীরে অ্যাসিড ঢেলে দেয় অভিযুক্ত। নয়ডার সেক্টর ১৪৮ স্টেশনের কাছে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির ঝোপের কাছ দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। একইসঙ্গে ওই ছুরি এবং অ্যাসিডও উদ্ধার হয়েছে। প্রথম থেকেই পুলিশের সন্দেহ ছিল জাকিরের ওপর। তবে ঘটনার দিন থেকেই সে ছুটিতে ছিল। পুলিশ তার মোবাইল ফোন ট্র্যাক করার চেষ্টা করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে পুলিশ সন্দেহভাজনের অবস্থান জানতে পারে। সুভাষ বিহারের ৬০ টিরও বেশি জায়গায় ২০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের সময় জাকির স্বীকার করেছে, যে মহিলা তাকে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। সেই কারণেই তাঁকে খুন করার পরিকল্পনা করেছিল জাকির।