হাইকোর্টে ধাক্কা রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের! “করা যাবেনা সংবাদ মাধ্যমের কণ্ঠরোধ” নির্দেশ আদালতের

দেবজিৎ মুখার্জি, কলকাতা: অভিষেক পত্নী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে প্রশ্ন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যর। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্ত নিয়ে সংবাদ মাধ্যমগুলি অযথা অতিরঞ্জিত খবর করছে। আর এই অতিরঞ্জিত খবরের জেরে জনপ্রতিনিধি হিসেবে মানহানি হচ্ছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের। এই দাবি নিয়েই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বুধবার বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য স্পষ্ট জানিয়ে দেন, সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠ রোধ করার নির্দেশ দিতে পারে না আদালত। আর এই ধরনের সংবাদ প্রকাশের বিরোধিতা করে কেন আদালত অবমাননার মামলা করছেন না? বৃহস্পতিবার ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে।

    এদিন মামলার শুনানিতে আবেদনকারী আইনজীবী কিশোর দত্ত বলেন, ‘সংবাদ মাধ্যমের একটা সীমা থাকা প্রয়োজন। ইডি সিবিআই নিয়ে তারা যা যা খবর করছে তাতে মিডিয়া ট্রায়াল হচ্ছে। আমার পরিবার আছে এবং তাঁদের প্রত্যেকেই সম্মানীয়। সম্মান নিয়ে বাঁচার অধিকার সবার আছে। আদালতের এই সমস্ত কিছু নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার রয়েছে।’ এর পর বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘একটা সাংবিধানিক আদালত যদি সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করতে থাকে তাহলে সেটা গণতন্ত্রের জন্য ভাল ব্যবস্থা নয়। তবে সবকিছুর মধ্যে একটা ব্যালান্স থাকা উচিত। সেটা দেখতে হবে।’ তিনি রুজিরার উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, ‘কেন এই খবরগুলোর বিরুদ্ধে আদালতে অবমাননার মামলা করছেন না?’ বিচারপতি আরও বলেন, ‘মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণে রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামলার আবেদন শুনে মনে হচ্ছে কালীঘাট থানা যেন সারা রাজ্যের নিয়ন্ত্রক।’

    অন্যদিকে কেন্দ্রের আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য বলেন, ‘এই অভিযোগ নিয়ে মামলাকারী এখন বিদেশি আদালত অবমাননার মামলা করতে পারেন। কিন্তু তার নাগরিক অধিকার রক্ষার দাবি এই ক্ষেত্রে আযৌক্তিক। কারণ তিনি এই দেশের নাগরিক নন। এই মামলাকে কোনওভাবে গুরুত্ব দেওয়া উচিত নয়। কারণ স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় পরিবার সমেত রক্ষার নির্দেশ দেওয়ার সুযোগ নেই।’

    উল্লেখ্য, বুধবার ইডি দফতরে নিয়োগ দুর্নীতিতে হাজির হন রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগেই কলকাতা হাইকোর্টে তাঁর এই মামলা এবং বিচারপতির পর্যবেক্ষণে যেন উঠে এল একাধিক প্রশ্ন। ভারসাম্য রাখার কথা বললেও সংবাদমাধ্যমের কন্ঠরোধ করার আবেদনে সায় দিলেন না বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য।  বৃহস্পতিবার ফের রয়েছে এই মামলার শুনানি।