গ্রাহক সেবা পরিষেবা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ মেমারিতে

নূর আহমেদ, মেমারী, ২১ নভেম্বর রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের গ্রাহক সেবা পরিষেবা কেন্দ্র থেকে কোটি টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে মেমারির রসুলপুরের দলুই বাজার এলাকায়। গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র বন্ধ থাকায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার কে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায় গ্রাহকরা। অভিযোগ রসুলপুরের দলুই বাজার এলাকায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র শাখা থেকে দিনের পর দিন গ্রাহকদের টাকা তছরুপ করা হয়েছে। ওই শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারি কিরিটি বৈরাগ্যের বিরুদ্ধে। অভিযোগ গ্রাহকরা ওই গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে টাকা জমা করলেও দেওয়া হতো না কোন রিসিভ কপি। সেই সাথে ফিক্স ডিপোজিট এর ক্ষেত্রেও কোন শংসাপত্রের কপি ও দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। ব্যাংকে গ্রাহকরা টাকা তুলতে গেলে কখনো লিংক নেই, কখনো বা আঙুলের ছাপ মিলছে না বলে গ্রাহকদের প্রায়সই ফিরিয়ে দেওয়া হতো।

    গত বৃহস্পতিবার থেকে কোন বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই বন্ধ থাকে ওই গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র। মঙ্গলবার ওই গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র বন্ধ দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রাহকেরা। প্রায় তিন শতাধিকেরও বেশি গ্রাহক রয়েছেন ঐ গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে। যাদের থেকে প্রায় এক কোটি র বেশি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ গ্রাহকদের। ওই গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে যারা আসতেন তাদের মধ্যে অধিকাংশই দিনমজুর। অনেকেই লক্ষ্মীর ভান্ডারে টাকা তুলতে আসতেন। কিন্তু সেই টাকা তুলতে এসেও পেতেন না গ্রাহকেরা। প্রধান শাখায় গেলেও সেখান থেকে গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে গ্রাহকদের পাঠিয়ে দেয়া হতো। এমনি সব অভিযোগের ভিত্তিতে রসুলপুরের ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ম্যানেজারকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন গ্রাহকরা। সেই সাথে একটি অভিযোগের কপি ও জমা করেন ব্যাংক ম্যানেজার কে।

    ঘটনায় অভিযোগের আঙুল ওঠা দায়িত্বপ্রাপ্ত গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের আধিকারিক কিরিটি বৈরাগ্যের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ব্যাংকের ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলা হলে তিনি জানান। গ্রাহকদের অভিযোগের কপি এবং ব্যাংক স্টেটমেন্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট কোনো ফিক্স ডিপোজিট জমা পড়েনি ঐ গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র থেকে। গ্রাহকরা তাদের ব্যাংকিং স্টেটমেন্ট জমা করার পর, খতিয়ে দেখা হবে ব্যাংকিং ডিটেইলস।

    বিক্ষোভের মুখে ব্যাংকে হাজির হয়ে মেমারি থানার পুলিশ। এরপর পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে এনে ব্যাংক ম্যানেজারের সঙ্গে গ্রাহকদের কথা বলা হয়। ব্যাংক ম্যানেজার জানান অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই সাথে গ্রাহকদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ারও ব্যবস্থা করা হবে।

    গ্রাহকরা জানান মঙ্গলবার রাতে মেমারি থানায় অভিযোগ করা হবে। ইতিমধ্যে ব্যাংক ম্যানেজার কে মার্চ পিটিশন জমা করা হয়েছে।। আমরা প্রত্যেকেই দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারের মানুষজন। অবিলম্বে আমাদের টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।

    প্রায়সই গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ওঠে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ! কিন্তু বার কেন এই অভিযোগ গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের দিকে ?ধারাবাহিকভাবে এই ধরনের অভিযোগ যদি উঠে আসে তাহলে গ্রামীন স্তরের যে সকল মানুষের সুবিধার্থে এই গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র গুলির খোলা হয়েছে! তারা আদৌ কি আর গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের উপর আস্থা রাখতে পারবেন? আদৌ কি সত্যিই যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা তাদের ক্ষতিপূরণ পাবেন?