|
---|
নিজস্ব সংবাদদাতা,ঝাড়গ্রাম: আনন্দ পুরস্কার জয়ী কথা সাহিত্যিক নলিনী বেরা নিজের জন্মভূমি ঝাড়গ্রাম জেলার বাছুরখোয়াড় গ্রামে, তাঁদের বসত বাড়িতে একটি পাঠাগার স্থাপন করলেন।নয়াগ্রামের বিধায়ক দুলাল মুর্মু সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে পাঠাগারটির উদ্বোধন হয়। পাঠাগার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানান কথা সাহিত্যিক নলিনী বেরা ও তাঁর সহধর্মিনী এবং অন্যান্য শুভানুধ্যায়ীরা। পাঠাগারের নাম রাখা হয়েছে তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ “সুবর্ণরেণু সুবর্ণরেখা” র নামে। গ্রন্থাগারটিতে প্রায় সহস্রাধিক পুস্তক রয়েছে।এই পাঠাগারে উপন্যাস,কবিতার বই,গল্পের বই, নানা পত্রপত্রিকার পাশাপাশি ছাত্র ছাত্রীদের জন প্রয়োজনীয় নানা পুস্তক রাখা হচ্ছে। এই গ্রন্থাগার বর্তমানে ছোট আকারে যাত্রা শুরু করলেও নলিনী বেরা জানান একে বৃহদাকার প্রদান করার সবরকম চেষ্টা তিনি করবেন।
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত অজিতেশ নাগ, ফটিক চাঁদ ঘোষ, অনিমেষ সিংহ, বিশ্বজিৎ পাল, সুরেন্দ্রনাথ হেমরমেরা নিজের লেখা ও সংগৃহীত বাংলা ও সুবর্ণ রৈখিক ভাষায় লেখা পুস্তক নলিনী বাবুর হাতে তুলে দেন, গ্রন্থাগারের জন্য। উপস্থিত সকলের আশা, এলাকার সাহিত্য চর্চা ও ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে বিশেষ সহায়ক হবে এই পাঠাগার। এদিন সুবর্ণরৈখিক পরিবারের পক্ষ থেকে নলিনী বেরাকে বিশেষ স্মারক সম্মানে সম্মানিত করা হয়। পাশাপাশি এদিন তরুণ কবি প্রমিশ প্রতিম পাঁঞ্জা সম্পাদিত ‘ভাঙন’ পত্রিকার মোড়ক উন্মোচন ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। পাঠাগার উদ্বোধন ও ভাঙন পত্রিকা প্রকাশ উপলক্ষ্যে জঙ্গলঘেরা ও জনজাতি অধ্যুষিত বাছুরখোয়াড় গ্রামে উপস্থিত হয়েছিলেন একঝাঁক কবি, সাহিত্যিক ও সাহিত্যপ্রেমী সমাজকর্মী বৃন্দ। পাঠাগার উদ্বোধন উপলক্ষ্যে মনোজ্ঞ আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেন উপস্থিত বিশিষ্ট জনেরা ও স্থানীয় কচিকাঁচারা। এদিন ভাঙন পত্রিকার শালপাতার মোড়ক উন্মোচন করেন কথা সাহিত্যিক নলিনী বেরা, সাহিত্যিক সূর্য নন্দী ও সাহিত্যিক জহরলাল বেরা। পাশাপাশি এদিন কবি প্রমিশ প্রতিম পাঁঞ্জা সম্পাদিত সুবর্ণ রৈখিক ভাষার গল্প সংকলন ‘সুবর্ণধারা’র এবং সুবর্ণ রৈখিক ভাষার কবিতা সংকলন ‘ভালবাসি লেখা নাম” এর মোড়ক উন্মোচন হয়। এদিন ‘ভাঙন’ পত্রিকার তরফে কবি অভিনন্দন মুখোপাধ্যায়ের হাতে ‘অশোক মহান্তি স্মৃতি সম্মান-২০২৩’ তুলে দেন কথা সাহিত্যিক নলিনী বেরা এবং লেখক, সম্পাদক চন্দন দাসের হাতে ‘গবেষক উপেন পাত্র স্মৃতি সম্মান-২০২৩’ তুলে দেন সাহিত্যিক সূর্য নন্দী ও প্রয়াত উপেন পাত্র’র পুত্র রাজেশ পাত্র। ভাঙনের অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানান পত্রিকার সম্পাদক প্রমিশ প্রতিম পাঁঞ্জা।
পাশাপাশি এদিন “ল্যাকেটু” পত্রিকার পক্ষ থেকে সম্পাদক জহরলাল বেরা ‘ল্যাকেটু স্বর্ণলতা স্মৃতি সম্মাননা-২০২৩’ তুলে দেন সাহিত্যিক অজিতেশ নাগের হাতে। বিভিন্ন পর্বে এদিনের অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ, সঙ্গীত,নৃত্য পরিবেশনা ও আলোচনায় অংশ নেন ফটিক চাঁদ ঘোষ, বিপাশা পাণি, দীনেশ কর, অনিমেষ সিংহ,সৌকত আলি সা, বিশ্বজিৎ পাল,শাশ্বতী খুঁটিয়া,রুবী সাউ, কৌশিক বর্মণ, মানবেন্দ্র পাত্র,সুরেন্দ্র নাথ হেমরম, রেখা দে,প্রসাদ সিং ,অজিতেশ নাগ, অভিনন্দন মুখোপাধ্যায়,সূর্য নন্দী, চন্দন দাস ,উৎপল তালধী, বংশী মোহন প্রতিহার সহ অন্যান্য বিশিষ্টজনেরা। এছাড়াও এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বজিৎ পাল, জয়দেব পাণি, নীলকণ্ঠ পানি, রাজেশ্বরী ষড়ঙ্গী মুখোপাধ্যায়, সুদীপ কুমার খাঁড়া, কিশোর কুমার রক্ষিত, তন্ময় বক্সী, নীলকন্ঠ পাণি, সুনীল বরণ খুঁটিয়া, উত্তম কুইলা প্রমুখ। ছিলেন ঝাড়গ্রাম সাহিত্য আড্ডার প্রতিনিধিরা। পাঠাগারের যাত্রা শুরুর উৎসবটিকে আরও আনন্দঘন করে তুলতে একটি মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন করা হয়।তাতে উপর অতিথি বৃন্দের পাশাপাশি স্থানীয় মানুষজন অংশ নেন।