১০ বছর পর ঘরে ফিরল নলহাটির আদিবাসী কিশোরী 

খান আরশাদ, বীরভূম : ১০ বছর পর ঘরে ফিরল বীরভূমের নলহাটির আদিবাসী কিশোরী। বীরভূমের নলহাটি থানার অন্তর্গত বারা গ্রামের আদিবাসী পাড়ার এক ব্যক্তি দিল্লিতে সপরিবারে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিলেন প্রায় ১০ বছর আগে। কয়েকদিন সেখানে থাকার পর তাঁরা বাড়ি ফিরে এলেও তাঁর মেয়ে সেখানে তার মাসির কাছে থাকার জেদ ধরে , ফলে তাকে মাসির বাড়িতেই রেখে নিজের গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন ওই ব্যক্তিরা । কিন্তু কিছুদিন পরেই তার বোনের বাড়ি থেকে খবর আসে যে তার মেয়ে হঠাৎ বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছে। তার আর কোন খোঁজ খবর পাওয়া যায়নি। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও মেয়ের কোন খোঁজ খবর না পাওয়ায় প্রায় হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন নিখোঁজ ওই কিশোরীর বাবা। এরপর দীর্ঘ ১০ বছর পর হ্যাম রেডিও নামে কলকাতার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা নলহাটি থানার লোহাপুর ফাঁড়ির ASI স্বপন মালের সাথে যোগাযোগ করে। ASI স্বপন মাল তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান এবং নিখোঁজ ওই কিশোরীর পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেন।

    জানা গিয়েছে নিখোঁজ ওই কিশোরী দিল্লিতে তার মাসির বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর রাস্তা ভুলে গিয়ে আর বাড়ি ফিরতে পারেনি। কয়েকজন সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে একটি হোমে পাঠিয়ে দেয়। ওই কিশোরীর ভাষা বাংলা হওয়ায় তাকে হাম রেডিওর মাধ্যমে হোম কর্তৃপক্ষ কলকাতায় পাঠিয়ে দেয়। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে ওই কিশোরী মানসিক দিক দিয়ে কিছুটা ভারসাম্যহীন, ফলে সে বাড়ি না ফিরতে পেরে বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে।

    ASI স্বপন মাল জানান বর্তমানে তিনি লোহাপুরে কর্মরত রয়েছেন। এর আগে তিনি রাজনগর থানায় ছিলেন। রাজনগর থানায় থাকাকালীনই হ্যাম রেডিও নামে এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাহায্যে এক মহিলাকে খুঁজে পাওয়া গেছিল, তখন থেকেই তাদের সাথে যোগাযোগ রয়েছে । কয়েকদিন আগে তারা বারা গ্রামের নিখোঁজ হওয়া ওই কিশোরীর সন্ধান দেয়, বর্তমানে ওই কিশোরী এখন যুবতী। তার বয়স এখন ২২ । ওই কিশোরী বর্তমানে যে এখন যুবতী সে কলকাতার একটি হোমে রয়েছে জানতে পেরে স্বপন বাবু তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেন এবং নিখোঁজ হওয়া ওই কিশোরী অবশেষে নিজের বাড়িতে ফিরে তার বাবা মাকে ফিরে পেল।

    নিখোঁজ ওই যুবতীর বাবা-মা স্বপন মাল ও হাম রেডিওকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। নিখোঁজের বাবা-মা জানিয়েছেন তারা হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন। তারা ভাবেননি তাদের মেয়ে বেঁচে আছে। এমত অবস্থায় নিজের মেয়েকে ফিরে পেয়ে খুশিতে আত্মহারা বাবা-মা।