মালদায় ছাত্রের সুটকেস বন্দী দেহ উদ্ধার!

নিজস্ব সংবাদদাতা মালদা, ৬ অক্টোবর :  বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কলকাতা নিউটাউন এলাকার ভাড়াবাড়ি থেকে সুটকেস বন্দী মালদার কালিয়াচকের ওই ছাত্রের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। অপহরণের পর ৩০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ না দেওয়াই ওই ছাত্রকে খুন করেছে দুষ্কৃতীরা বলে অভিযোগ করেছেন মৃতের পরিবার। আর বিষয়টি জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কালিয়াচক এলাকায়।

    শনিবার সকালে কালিয়াচক-৩ ব্লকের বীরনগর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৬ মাইল গুরুটোলা গ্রামে এসে পৌছায় মৃত ছাত্রের কফিনবন্দি দেহ। হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। জানাজার নামাজে ১৬ মাইল ঈদগাহাতে ভিড় উপচে পড়েছিল। শনিবার সকাল ৯ টা নাগাদ ১৬ মাইল কবর স্থানে কবর দেওয়া হয় মৃত ছাত্রের।

    পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, নেশাগ্রস্ত জাতীয় কোন পদার্থ খাইয়ে তার একপরে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে ওই ছাত্রকে। মৃত ছাত্রের দেহ উদ্ধারের পর তার মুখে সেলোটেপ বাধা ছিল হাত-পা ছিল বাঁধা অবস্থায়। যদিও এই খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মূল অভিযুক্ত গৌতম সিংহ, পাপ্পু ঘোষ সহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে নিউটাউন থানা পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে মৃত ছাত্রের দুই বান্ধবীও রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

    পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে , মৃত ছাত্রের নাম সাজিদ হোসেন (১৯)। তার বাড়ি মালদার কালিয়াচক থানার ১৬ মাইল এলাকায়। পরিবারের একমাত্র ছেলে ছিল সাজিদ। মৃত ছাত্রের বাবা মুক্তার হোসেন কালিয়াচকের একটি হাইস্কুলের শিক্ষক। মা সামিমা খাতুন। তিনি কালিয়াচকের একটি বেসরকারি ইংলিশ মিডিয়ামের কর্ণধার তথা প্রিন্সিপাল। এলাকার সম্ভ্রান্ত পরিবার রয়েছে সাজিদ হোসেনের।

    পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাজিদ হোসেন মেডিক্যালে নিট পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য কলকাতার নিউটাউনের একটি মেসে থাকত। গত বুধবার রাতে তাকে মেসের রুমে না পাওয়ায় বাড়িতে ফোন করা হয়। তারপরেই কিডন্যাপ হয়েছে বলে বাড়িতে তার বাবার কাছে ফোন আসে । মুক্তিপণ বাবদ ৩০ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার রাতে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়। ঘটনার খবর বাড়িতে আসার পরই শোকস্তব্দ হয়ে যায় পরিবার।

    প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, মদ খাইয়ে বালিশ চাপা দিয়ে প্রথমে খুন করা হয় সাজিদ হোসেনকে। তারপরে মুখে সেলোটেপ জড়িয়ে দেয় মৃত্যু নিশ্চিত করতেই। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে একথা স্বীকার করেছে ধৃত গৌতম সিং।