|
---|
দেবজিৎ মুখার্জি, পূর্ব মেদিনীপুর: প্রশাসনিক নির্দেশে পুজোর মুখে ঘরছাড়া তৃণমূল সমর্থকদের বাড়ি ফেরানোকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল ভূপতিনগর। কোথাও তৃণমূল কর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। আবার কোথাও বিজেপির দলীয় কার্যালয় এবং বিজেপি-পরিচালিত দুর্গাপুজো মণ্ডপ ভাঙচুরে অভিযুক্ত হল তৃণমূল।
বৃহস্পতিবার সকালে ১৩ জন ঘরছাড়া তৃণমূল কর্মীকে বাড়ি ফেরাতে উদ্যোগী হয় প্রশাসন। পুলিশি নিরাপত্তায় তাঁদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়। অভিযোগ, ভগবানপুর-২ ব্লকের একতারপুরে ওই তৃণমূল কর্মীদের বেধড়ক মারধর করা হয় পুলিশের সামনেই। অভিযোগ, তাঁদের গ্রামে ঢুকতে দেয়নি বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। এই ঘটনায় চার জন তৃণমূল কর্মী জখম হন। তাঁদের উদ্ধার করে মুগবেড়িয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। কাঁথি র এসডিপিও সোমনাথ সাহা এ দিন বলেন, “ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে রাজনৈতিক অশান্তির কারণে তা সম্ভব হয়নি।’’
প্রসঙ্গত, এ বার পঞ্চায়েত ভোটে জুখিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে ১২টি করে আসনে জয়ী হয়েছে তৃণমূল এবং বিজেপি। সমান-সমান আসন পাওয়ার পর টসের মাধ্যমে তৃণমূল থেকে জয়ী আলপনা শীট প্রধান হন। উপপ্রধান হন অম্বিকেশ মান্না। যদিও, বোর্ড গঠন হওয়ার পর থেকে একতারপুর গ্রামে ১৩ জন তৃণমূল কর্মী ঘরছাড়া ছিলেন। তাঁরা পুজোর আগে বাড়ি ফিরতে চেয়ে ব্লক প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছিলেন। তার ভিত্তিতে এদিন ঘর ছাড়া তৃণমূল কর্মীদের বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করে ভূপতিনগর থানার পুলিশ। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তাঁরা এ দিন বাড়ি ফিরতে পারেননি।
পরে সামান্য দূরে মুগবেড়িয়ার সুশীলা মোড়ে বিজেপি এবং তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে বচসা ও সংঘর্ষ হয়। বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, তাদের দলীয় কর্মীদের মারধর করার পাশাপাশি মোটর বাইক ও দলীয় কার্যালয়ের জানলার কাচ ভাঙা হয়েছে। বাদ যায়নি তাদের একটি দুর্গাপুজোর মণ্ডপ। পরে বিরাট পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে ভূপতিনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি বলছেন,”তৃণমূল আশ্রিত কুখ্যাত দুষ্কৃতীরা এ দিন আমাদের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর করার পাশাপাশি আমাদের কর্মীদের মারধর করেছে। পুজো মণ্ডপ ও একাধিক মোটরবাইক ভাঙচুর করেছে তারা। ১২ ঘন্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করা হলে সকলকে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন চলবে।”
আবার পাল্টা এ দিন অশান্তির জন্য বিজেপিকেই দায়ী করেছে রাজ্যের শাসক দল। এ প্রসঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তথা কাঁথি সংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সম্পাদক মানব পড়ুয়া বলছেন, “পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকে আমাদের দলের ১৩ জন কর্মী ঘরছাড়া। চেষ্টা করেও বিজেপি কর্মীদের বাধায় আমাদের দলের কর্মীদের বাড়িতে পৌঁছে দিতে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ। আমাদের চার কর্মী গুরুতর আহত। অথচ বিজেপি আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করছে!’’