বৃষ্টির জমা জলে ডুবে নষ্ট কয়েক হাজার বিঘা জমির ফসল

বৃষ্টির জমা জলে ডুবে নষ্ট কয়েক হাজার বিঘা জমির ফসল

    নতুন গতি,মালদা : খালের মুখে ছোট বাঁধ দিয়ে জল নিকাশি ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়ায় বৃষ্টির জমা জলে ডুবে নষ্ট হতে বসেছে কয়েক হাজার বিঘা জমির ফসল। গত বছরও একই সমস্যায় পড়ে প্রশাসনের নিকট আবেদন জানিয়েও কোনো লাভ হয় নি বলে খাল সংলগ্ন চাষীদের অভিযোগ । কিন্তু বছর পেরিয়ে গেলেও সমস্যা মেটেনি বলে অভিযোগ। স্থানীয় কিছু বাসিন্দা খালের মুখ বাঁধ দিয়ে বেধে দেওয়ায় জল নিকাশি ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের বসতপুরে ঘগা খালের ঘটনা । ওই এলাকায় নিকাশি সমস্যা মেটাতে তাই ফের প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। দ্রুত মাঠে জমে থাকা জল নিকাশি না হলে কয়েক হাজার বিঘা জমির পাট নষ্ট হয়ে যাবে বলে চাষিদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। পাশাপাশি জলে ডুবে এরমধ্যেই কয়েকশো বিঘা ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে চাষিদের অভিযোগ ।কিন্তু এরপরেও প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ ।

    বর্তমানে জমি বাঁচাতে ইতিমধ্যেই কৃষি ও কৃষক বাঁচাও কমিটি গড়ে বাসিন্দারা আন্দোলনেও নেমেছেন।

    বসতপুর খগা খালের পাশে স্থানীয় কয়েকজনের রায়তি জমি থাকায় সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।

    হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের বিডিও অনির্বান বসু বলেন, কীভাবে দ্রুত সমস্যা মেটানো যায় তা প্রশাসনের তরফে দেখা হচ্ছে।

    প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,হরিশ্চন্দ্রপুর -১ ব্লকের বরুই, তুলসিহাটা ও রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকার মাঠের জল বসতপুর এলাকার বাহাদুরা সেতুর নীচে ঘগা খাল দিয়ে বেরিয়ে যায়। এরপর ওই জল মহানন্দা নদীতে । কিন্তু বাহাদুরা সেতুর অদূরে খালের কিছুটা জমি রায়তি ছিল। ওই খাল শতাধিক বছরের পুরনো হওয়ায় কেউই এতদিন জল নিকাশে বাধা দেননি! কিন্তু গত বছর খালের একাংশে থাকা জমি বিক্রি করে দিয়ে অন্যত্র চলে চলে গিয়েছেন জমির মালিকেরা। বর্তমানে ওই জমির মালিকেরা নিজের জমিতে বাঁধ বেধে দিয়েছেন। ফলে খাল দিয়ে জল নিকাশি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সমস্যায় পড়েছেন বহু চাষী ।

    বৃহস্পতিবার থেকে টানা বৃষ্টির জেরে বিস্তীর্ণ এলাকার মাঠের ফসলি জমিতে কোমর সমান জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। কয়েকদিন ধরে জল দাঁড়িয়ে থাকায় এরমধ্যে ধানের বীজতলা পচে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। নষ্ট হতে বসেছে পাটের খেতও।

    স্থানীয় চাষি মেহবুব আলম, লক্ষ্ণণ সাহারা বলেন, মাঠে ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পাটগাছ পচে যাচ্ছে। যা অবস্থা তাতে পথে বসতে হবে।

    কৃষি ও কৃষক বাঁচাও কমিটির সম্পাদক দিল রোজ বলেন, হাতে গোনা কয়েক জনের জন্য হাজার হাজার বিঘা জমির ফসল নষ্ট হতে বসেছে। প্রশাসনকে সমস্যার কথা জানিয়েছি।
    দ্রুত সমস্যার সমাধান না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে ওই এলাকার চাষীরা বলে হুমকি দেন ।

    কয়েকদিন আগে চাষীদের সমস্যার কথা জানতে পেরে ওই এলাকা পরিদর্শনে আসেন স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য সন্তোষ চৌধুরী । তিনিও প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সমস্যাটি সমাধান করা যায় সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে ।