অশনি’ সংকেত উদ্বেগ বাড়াচ্ছে চাষিদের

নিজস্ব সংবাদদাতা : এপ্রিলের ঝড় বৃষ্টির ফলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হয় জেলার চাষিদের ৷ সেই রেশ কাটতে না কাটতে এবার ‘অশনি’ সংকেত উদ্বেগ বাড়াচ্ছে হুগলির চাষিদের। বোরো ধান এখনও মাঠে। গত মাসের কালবৈশাখী ঝড়ের দাপটে মাঠে থাকা একদফা ধান নষ্ট হয়। নষ্ট হয়েছে আমও। এরই মধ্যে নতুন একটি ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাব কতটা পড়বে, তা নিয়ে চিন্তায় আছেন হুগলির ধান থেকে আম চাষিরা ৷ ‘অশনি’ নিয়ে উৎকণ্ঠায় আছে কৃষি দফতরও।

    কৃষি দফতর থেকে মাইকিং করে এলাকায় প্রচার করা হচ্ছে, যাতে চাষিরা দ্রুত ধান কেটে তাদের ঘরে তুলে নেয়। ধান চাষিদের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, তারা যেন পর্যাপ্ত নালার ব্যবস্থা করে রাখেন জমিতে, যাতে দ্রুত জমি থেকে জল বেরিয়ে যেতে পারে। গোলার ফসল যাতে নষ্ট না হয়ে যায় তার জন্য অতিরিক্ত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।হুগলির কৃষি দফতর সূত্রে খবর, রবিবার পর্যন্ত ৬৫% মাঠের ধান ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছেন চাষিরা। বাকি ধান যাতে দ্রুত তুলে ফেলা হয় তার জন্য ব্লক ও পঞ্চায়েত এলাকায় প্রচার শুরু করা হয়েছে। ফসলের জমিগুলোতে বিশেষ নিকাশি ব্যবস্থা রাখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হুগলির গোঘটে রবিবার সন্ধ্যা অবধি চাষিদের তৎপরতা ধরা পড়েছে


    ৷ মাঠ থেকে ধান তুলে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন চাষিরা৷স্থানীয় চাষি হারাধন ধর বলেন, বৃষ্টির আশঙ্কায় ধান সময়ের আগেই তুলে ফেলা হচ্ছে। ধান পুরোপুরিভাবে না পাকার জন্য ধানের রঙ নষ্ট হয়েছে, যার ফলে ধানের দাম ভালো পাওয়া যাবে না বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। তিঁনি আরও বলেন, “এমনিতেই কয়েক দিনের বৃষ্টিতে জমি ভিজে রয়েছে। এরপর নিম্নচাপে ভারি বৃষ্টি হলে, ধানের তো ক্ষতি হবেই তার সঙ্গে অন্যান্য সবজি যেমন তিল, পান, সবজি সবেতেই ক্ষতির মুখে পড়বে তাঁরা”, বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।

    একই তৎপরতা ধরা পড়েছে চুঁচুড়া, সিঙ্গুর এলাকার আম বাগানগুলোতে। গত ৩০ শে এপ্রিলের কালবৈশাখীর পর আমের চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এমনিতেই এ বছর আমের ফলন কম, তার মধ্যে ঝড় বৃষ্টির জন্য অনেক আম পড়ে গেছে। এরপর আগাম ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পেয়ে নতুন করে ক্ষতির সম্মুখীন হতে চাইছেন না চাষিরা।হুগলি জেলার বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সুত্রে খবর, সবকটি মহকুমা, পুরসভা, ব্লক, পঞ্চায়েতগুলোতে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে, সিভিল ডিফেন্স মোতায়েন আছে সর্বত্র। যে কোনও বিপর্যয় মোকাবিলা করার জন্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন তারা।