|
---|
বাবলু হাসান লস্কর সুন্দরবন : সুন্দরবনের বেশিরভাগ মানুষ নদীতে মাছ-কাঁকড়া ধরে ও জঙ্গলে মধু সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করে। নদীতে মাছ কাঁকড়া ধরার সময় মৎস্যজীবীদের উপর জলদস্যুদের আক্রমণের ঘটনা নতুন নয় লেগেই থাকে। সাম্প্রতিক কালে তা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২১ সেপ্টেম্বর, কুলতলির ভুবনখালির বাসিন্দা বাদল গায়েন তার তিন সহকর্মীর সঙ্গে সুন্দরবনে বেণিফেলী হামালের বেড় ক্লাবের খালে নৌকা নিয়ে মাছ ধরতে গেলে মাঝরাতে প্রায় ১৫ জনের উপর দুস্কৃতি দল চড়াও হয়। তাদের মারধর করে ৬৫ লিটার ডিজেল, ৪ টি টর্চ, ২ টি তোপসে মাছ ধরার জাল, ২ টি আমুদী মাছ ধরার জাল, ৩ টি ভোলামাছ ধরার জাল, ১ টি স্মার্টফোন, ২৫ কেজি চাল, আনুমানিক ১৫০০ টাকার মুদিখানা বাজার, মেশিনের হ্যান্ডেল ইত্যাদি হাতিয়ে চম্পট দেয়। গত এপ্রিলে পাখিরালার বাসিন্দা সুপদ মন্ডল মধু সংগ্রহের জন্য নৌকা নিয়ে তারার খাল ও পশুর তলা খালে গেলে একই ভাবে তাদের উপর হামলা চালিয়ে যাবতীয় সামগ্রী লুট করে ডাকাতের দল। ঐ এপ্রিলেই জলদস্যুদের আক্রমণের আর একটি ঘটনা সামনে আসে। আমলামেথির বাসিন্দা সাধন মন্ডল মধু আনতে নৌকা নিয়ে চোরা গাজী খালে গেলে ডাকাতের দল তাদের ব্যাপক মারধর করে সব লুট করে পালায়। তাদের শারীরিক অবস্থা এতটাই গুরুতর ছিল যে, তাদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। মৎস্যজীবীদের উপর জলদস্যুদের হামলা বৃদ্ধি পেলেও কোথাও দুস্কৃতির দল এখনো পর্যন্ত তেমন ধরা পড়েনি। এমতাবস্থায় রুটিরুজির প্রয়োজনে নদীতে গেলে বাঘের আক্রমণের পাশাপাশি জলদস্যুদের আক্রমণের কারণে তাদের জীবন-জীবিকার নিরাপত্তা আজ প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে। গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি তথা এপিডিআরের জয়নগর ইউনিটির পক্ষ থেকে একাধিক দাবি দাওয়া নিয়ে মিছিল ও ডেপোরেশন দেন। মূলত তাদের দাবি
১) অবিলম্বে ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুস্কৃতিদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে।
২) লুট যাওয়া সামগ্রী উদ্ধার করে ভুক্তভোগী মৎস্যজীবীদের ফেরত দিতে হবে।
৩) জীবিকার প্রয়োজনে নদীতে মাছ-কাঁকড়া ধরতে বা মধু সংগ্রহ করতে গেলে তাদের জীবন ও জীবিকার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে।
৪) সুন্দরবনের নদীতে জলদস্যুদের হাতে আক্রান্ত মৎসজীবীদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৫) সুন্দরবনের নদীত জলদস্যুদের ধরা ও মৎসজীবীদের নিরাপত্তার জন্য থানায় থাকা স্পিড বোটগুলোকে সচল করতে হবে। বাঘের আক্রমণে ব্যক্তিদের কে সরকারি খরচে অ্যাম্বুলেন্স ও বিনামূল্যে সুচিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। আর এই ডেপুটেশনে উপস্থিত ছিলেন দঃ জেলা কমিটি পক্ষে সভাপতি দেবাশীষ ভট্টাচার্য, ডায়মন্ড হারবার শাখার সদস্য আলমাস আমেদ, জয়নগর শাখার পক্ষে মিঠুন মন্ডল ও আরিফুল খান সহ এলাকার কয়েকশত মৎস্যজীবী এই ডেপুটেশনে অংশগ্রহণ করেন।