বর্ধমান স্টেশনে জলের ট্যাংক ভেঙ্গে মৃতদের আর্থিক ঘোষণা রেলের।

লুতুব আলি, বর্ধমান, নতুন গতি : ১৩ ডিসেম্বর বর্ধমান রেলস্টেশনের যাত্রীরা ট্রেন ধরার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ঘড়ির কাঁটা তখন বেলা বারোটা ছুঁই ছুঁই। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বর্ধমান রেলস্টেশনের দুই ও তিন নং প্লাটফর্মের শতাব্দী প্রাচীন জলের ট্রাঙ্কের একাংশ ভেঙে পড়ে। ঘটনাস্থলেই তিনজন যাত্রীর মৃত্যু হয়। অসংখ্য যাত্রী আহত হন। অন্যান্য রেল যাত্রীরা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে ছোটাছুটি শুরু করলে এক ভয়াবহ আবহের পরিস্থিতি তৈরি হয়। বর্ধমান স্টেশনের বাইরে থেকে টোটো চালকেরা ছুটে আসেন আহত ব্যক্তিদের নিজেদের টোটো করে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘটনাস্থলে আর পি এফ, জিআরপি ও অন্যান্য আধিকারিকদের সঙ্গে পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু কুমার মাজি, পুলিশ সুপার আমানদ্বীপ সহ অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকেরা বর্ধমান স্টেশনে ছুটে আসেন। বর্ধমান স্টেশনের যাত্রী পরিষেবা নিয়ে মানুষের মনের মধ্যে ব্রিটিশ আমল থেকে ক্ষোভ। বর্ধমান স্টেশনে একসঙ্গে আপ ডাউন অনেকগুলি ট্রেন ঢুকে গেলে যাত্রীদের সিঁড়ি দিয়ে ওঠা নামার সময় ভয়ংকর এক অবস্থার তৈরি হয়। নামে আরপিএফ থাকে। অভিযোগ অধিকাংশ সময় সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামার সময় যাত্রীদের হিমশিম খেতে হয়। বিশেষ করে বয়স্ক ও অসুস্থ যাত্রীদের চরম অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়। চলমান সিঁড়িগুলি অধিকাংশ সময় বন্ধ থাকে বলে অভিযোগ। এদিনের দুর্ঘটনার ফলে বর্ধমান শহরের লাকুরডির বাসিন্দা মাহফুজা খাতুন, ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জের বাসিন্দা ক্রান্তি বাহাদুর, ঝাড়খণ্ডের পাকুরের বাসিন্দা সোনামনি টুডু র মৃত্যু হয়। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র দুর্ঘটনা স্থলে এসে হাজির হন। কৌশিক মিত্র বলেন দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের পঞ্চাশ হাজার ও নিহত ব্যক্তিদের রেলের নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। বেশ কয়েক বছর আগে বর্ধমান স্টেশনের প্রবেশদ্বারের মুখের উপরের অংশ ভেঙে পরে। ব্রিটিশ আমলের বর্ধমান স্টেশন এখনো অত্যাধুনিক ভাবে গড়েন না ওঠায় যাত্রী দের মধ্যে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। যদিও অমৃত স্টেশন প্রকল্পের আওতায় বর্ধমান স্টেশন কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। রেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ যে জিনিস গুলি সামনে আসছে সেগুলি দ্রুত সংস্কার করা হবে ও অমিত স্টেশন প্রকল্পকে খুব শীঘ্রই রূপ দেওয়া হবে।