APDR জয়নগর শাখার উদ্যোগে কুলতলী বিট অফিসে ডেপুটেশন

বাবলু হাসান লস্কর, কুলতলী, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা : দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার রায়দিঘি রেঞ্জের কুলতলী বিট অফিস এলাকায় MGNREGA প্রকল্পের মধ্যমে ১০০ দিনের কাজের বকেয়া মজুরি দীর্ঘদিন ধরে পাচ্ছে না জব কার্ড হোল্ডাররা। বারে বারে বিভিন্ন দপ্তরে তারা জানিয়েও কোনো ভাবেই মেলেনি সুরাও অবশেষে আজ কয়েক শত জব কার্ড হোল্ডারা সুন্দরবন সংলগ্ন রায়দিঘি রেঞ্জের কুলতলী বিট অফিসে ডেপুটেশন দিল। মূলতঃ তাদের দাবি ২০১৯ সাল থেকে বনদপ্তরের একাধিক স্কিমে নিজেদের জীবন বাজি রেখে হিংস্র জীবজন্তুরের আক্রমণ কে প্রতিহত করে জলে জঙ্গলে- কাঁদায় কাজ করেও মেলেনি হকের টাকা। একাধিক প্রকল্পের কয়েক হাজার শ্রমদিবস সৃষ্টি করেছিল। বনসৃজন সহ সুন্দরবন রক্ষায় একাধিক পরিকল্পনায় এরা শ্রমিকের কাজ করে। দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্ত নুন আনতে পান্তা-ভাত ফুরানো পরিবার গুলি বারে বারে বিট অফিসে জানিয়েও কোনো ভাবেই মেলেনি সুরাও অবশেষে তারা মানবাধিকার সংগঠন APDR জয়নগর শাখার সহযোগিতায় কুলতলী বিট অফিসে কয়েক শত জব কার্ড হোল্ডারদের নিয়ে ডেপুটেশন দেয়। যেখানে মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে জল-জঙ্গল কাঁদায় হিংস্র বাঘ কিম্বা কুমিরের আক্রমণ প্রতিহত করে জীবনের ঝুঁকি নিয়েও যারা ১০০ দিনের কাজ করল, দীর্ঘদিন ধরে তারা পাচ্ছে না তাদের ন্যায্য পাওনা টাকা। আর এই ন্যায্য পাওনার দাবিতে ডেপুটেশন।

    বিট অফিসে উপস্থিত ছিলেন APDR এর রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক আলতাফ আহমেদ, তাঁর কথায় দীর্ঘদিন ধরে যে সমস্ত পরিবারের সদস্যরা নিজেদের জীবন বাজি রেখে বাঘ কুমিরের আক্রমণকে তোয়াক্কা না করে বন-জঙ্গলে পরিবারের সদস্যদের মুখে একমুঠো অন্ন তুলে দেওয়ার জন্য কাজ করেছিল তারা আজ বঞ্চিত। অধিকাংশ দিনমজুর দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করলেও বন আধিকারিকরা তাদের সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসেন। প্রতিনিয়ত বেশ কয়েক কিলোমিটার পায়ে হেঁটে এই সমস্ত এলাকার মানুষজন বনদপ্তরের একাধিক স্টিমের কাজ করেছে। দীর্ঘদিন ধরে তাদের মজুরির পাওনা টাকা পাচ্ছে না। এ বিষয় নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের ও তারা জানালে ও মেলেনি সুরাও। এ বিষয় নিয়ে APDR র অন্যতম মুখপাত্র রনজিৎ সূরের কথায়, যারা বুক দিয়ে আগলে রেখে সুন্দরবনকে রক্ষা করছে এবং আমাদের রসনা তৃপ্তির জন্য লোভনীয় মাছ কাঁকড়া মধু সংগ্রহ করে। সেই সমস্ত মৎস্যজীবী পরিবার নিজেদের পেটের টানে মাছ কাঁকড়া ধরলেও অভাবে তাড়নায় তা বিক্রি বাটোয়ারা করে নিজেদের পরিবারের সদস্যদের মুখে একমুঠো অন্ন তুলে দেয়। সরকার উদাসীন যাদের জন্য আজ আমাদের রসনা তৃপ্তি হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করছে সরকার সেই সমস্ত পরিবারের দিকে বৃষ্টি নেই সরকারের। বাঘ কিম্বা কুমিরের আক্রমণে আহত কিম্বা নিহত হলে তাদের সরকারি সাহায্য মেলে না। কিছু কিছু বন আধিকারিক তাদের কলমের কালির লেখায় কোর এরিয়ায় প্রবেশ করার জন্য তাদের মৃত্যু। এতেই মহাফাপরে ঐ সমস্ত মৎস্যজীবীর পরিবারের সদস্যদের। আর এর জন্য তারা সমস্ত দপ্তর থেকে বঞ্চিত হয়। মাছ কাঁকড়া ধরার অধিকার দিনের পর দিন হারিয়ে যাওয়ার মুখে, বিশেষ করে গাঙ্গেও সুন্দরবন এলাকার মানুষজন পুরুষাঙ্গক্রমেই তারা জলে জঙ্গলে বিচরণ আর এই মুহূর্তে তাদেরকে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। নদীতে মাছ কাঁকড়া ধরতে গিয়ে অনেক সময় তারা বাঘের আক্রমণে আহত কিম্বা নিহত হলেও মিলছে না সরকারি সাহায্য। এ বিষয়ে বারে বারে দপ্তরকে জানিয়ে মেলে না সুরাও। আধিকারিক দের একটাই আর্জি যে কোর এরিয়ায় ঢুকে পড়ায় এই দুর্ঘটনা। সরকারি কোনো রুপ ন্যূনতম সাহায্য পায়না। বাঘ কিম্বা কুমিরের আক্রমণে নিহত পরিবারদের সরকারি চাকরির ঘোষণা করলেও মিলছে না নুন আনতে পান্তা ভাত ফুরানো পরিবারের। বাঁচার অধিকারটুকু কেড়ে নেওয়ার উপক্রম।