এতিমের পাশে মানবতা।

সংবাদদাতা : দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা থানার চার নম্বর আরামপুর এলাকার বড়বাড়ি পাড়া গ্রামের দুই এতিম পড়ুয়ার পড়াশুনার দায়িত্ব গ্রহণ করলো স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘মানবতা’। প্রসঙ্গত, পেশায় দিনমজুর সামসুল মোল্লা ২০১৭ সালে টেম্পু গাড়ি ধাক্কায় গুরুতর রকম হয় দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর ভোগান্তির পর ২০২২ সালে স্ত্রী ও তিন কন্যাকে রেখে মারা যান। তাদের বড় মেয়ে শাহিনা মোল্লা দশম শ্রেণীতে পড়লেও শিক্ষা সচেতনতার অভাবে আজ তার ঠিকানা শ্বশুর বাড়ি। বাকি দুটি সাইমা মোল্লা সপ্তম ও সাইফা মোল্লা প্রথম শ্রেণীতে পড়ে। তাদের মা হামিদা মোল্লার নুন আনতে পান্তা ফুরানোর এই সংসারে অন্য সংস্থানের জন্য যে কঠিন লড়াই করে চলেছে তারপর তাদের পড়াশোনা খরচ চালানো একরকম অসম্ভব হয়ে পড়েছিলো। সংবাদ মানবতার সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার আলি পিয়াদা’র কাছে আসে সমাজকর্মী অরভিনা পারভীনের মাধ্যম। তৎক্ষণাৎ।মানবতার পক্ষ থেকে সাইমা ও সাইফার পাশে দাঁড়াও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ২২ শে ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার তাদের হাতে তাদের শিক্ষা সরঞ্জাম স্কুল ব্যাগ বই খাতা কলম ইত্যাদি যা যা প্রয়োজন পৌঁছে দেয়া হয় মানবতার পক্ষ থেকে ওই এলাকার শিক্ষক বুবাই মজুমদারের মাধ্যমে । পাশাপাশি দুজনের মাসিক টিউশন ও যাবতীয় খরচ নিয়মিত বহনের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয় মানবতার পক্ষ থেকে। এ বিষয়ে তাদের টিউশনের খরচ বহন করার দায়িত্ব নেয় ডাক্তার মিনহাজ উদ্দিন এবং বইপত্র ক্ষেত্রে বাবলু মন্ডল নামক দুই সহৃদয় ব্যক্তি এগিয়ে আসেন মানবতার ডাকে সাড়া দিয়ে। উল্লেখ্য, সাইমা বড় হয়ে ডাক্তার ও সাফিয়া শিক্ষক হতে চায়।

    এছাড়াও সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট থানার ভোগপুর এলাকার নারায়ণ পাকুড়িয়া গ্রামের পড়ুয়া হানজারা খাতুনের পড়াশোনার দায়িত্ব মানবতা গ্রহণ করে।যার শিক্ষাক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সবকিছু ব্যবস্থার পাশাপাশি মাসিক টিউশনের ব্যবস্থাও করেছে।এবং এই টিউশনের খরচ নিয়মিত বহন করছে সমাজকর্মী তুলাইন পারভীন। এই বাচ্চার বাবা শেখ সাফিবুল ইসলাম এক বছর আগে মোটরসাইকেল অ্যাক্সিডেন্টে গুরুতর জখম হয় এবং বর্তমানে সে কর্মক্ষমতাহীন। ফলে তার পক্ষে সন্তানের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভবও ছিল না। তাই পড়াশুনার দায়িত্বটা গ্রহণ করে মানবতা। মানবতা সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার আলীপিয়াদা জানান এর আগে মানবতা আরো কয়েকজন এতিমের দায়িত্ব নিয়েছে।,বর্তমানে এই দুজনের দায়িত্ব নিল এবং আগামীতেও আরো এমন দায়িত্ব গ্রহণ করার বিষয়ে বদ্ধপরিকর। শিক্ষার আঙিনা থেকে কেউ যেন ছিটকে না যায় সেদিকে মানবতার সুনজর আছে এবং থাকবে। এ বিষয়ে জুলফিকার আরো জানান সারা বাংলায় বিভিন্ন এলাকায় আর্থিকভাবে অসচ্ছল কিংবা এতিমদের পাশে শিক্ষা বিষয়ে সচ্ছলদের একান্ত থাকা দরকার। শিক্ষা ছাড়া একটা জাতির অভাব দূরীকরণ সম্ভব না।