|
---|
দেবজিৎ মুখার্জি, কলকাতা: ১০০ দিনের ভুক্তভোগীদের পাওনা টাকা অবিলম্বে রাজ্যকে মিটিয়ে দেওয়ার জন্য দিল্লিকে বিশেষ বার্তা পাঠালেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। একদিকে তিনি যেমন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলনের যৌক্তিকতাকে স্বীকার করে নিয়ে তিনি স্মারকলিপি দিল্লিকে পাঠিয়েছেন। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় সরকারকে রাজ্যপাল লিখেছেন, বাংলার বিপুল সংখ্যক মানুষ সত্যিই ১০০ দিনের কাজ করে দীর্ঘদিন ধরে পাওনার অপেক্ষায় আছেন।
দিল্লির শীর্ষ মহলের সঙ্গে এই পাওনা মেটানো নিয়েও তাঁর কথা হয়েছে বলে রাজভবন সূত্রে খবর। কেন্দ্রীয় সরকারের দুই শীর্ষ ব্যক্তিত্বর সঙ্গে আলোচনায় রাজ্যপালের যুক্তি, কাল বিলম্ব না করে ১০০দিনের এই পাওনা মিটিয়ে দেওয়া উচিত। না হলে বাংলার সাধারণ মানুষ ভুল বুঝছে। শরীর খাটিয়ে শ্রম দিয়েও মজুরি না মেলায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জন্মাচ্ছে আমজনতার।
প্রায় দু’বছর ধরে রাজ্যের ন্যায্য পাওনা আটকে রাখা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের দাবির সঙ্গেও অনেকটাই একমত রাজ্যপাল। শুধু তাই নয়, ভুক্তভোগীদের সামনে রেখে ১০০ দিনের পাওনা নিয়ে অভিষেকের আন্দোলনের যৌক্তিকতা আছে বলেও ব্যক্তিগত ধারণা রাজ্যপালের। বস্তুত, এই কারণেই বাংলার ন্যয্য পাওনা পাইয়ে দিতে ব্যক্তিগতভাবে দিল্লিতে তদ্বিরও শুরু করেছেন বোস। কেন্দ্রীয় সরকারের একাংশ রাজ্যপালের এই সুপারিশের পর নড়েচড়ে বসেছে। তারাও চাইছে, বাংলার ন্যয্য পাওনা দ্রুত মিটিয়ে দেওয়া হোক। কিন্তু বঙ্গ বিজেপির একাংশ কেন্দ্রীয় সরকারের উপর আরও চাপ বাড়িয়ে বলছে, লোকসভা ভোটের আগে যেন কোনওমতেই বকেয়া পাওনা বাংলাকে দেওয়া না হয়।
বস্তুত, এই কারণেই কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাকে বকেয়া এক্ষুনি মেটাবে কী না তা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে দিল্লির রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের উপর। যদিও রাজ্যপাল ইতিমধ্যে নিজের বক্তব্য স্পষ্ট করে কেন্দ্রকে জানিয়ে বলেছেন, এতগুলো মানুষের পরিশ্রমের ন্যয্য পাওনা টাকা এতদিন ধরে আটকে রাখা ঠিক হয়নি। শুধু তাই নয়, আইন মেনে ও মানবিক কারণেও এই টাকা দ্রুত মিটিয়ে দেওয়াও জরুরি। যদিও এ বিষয়ে রাজ্যপাল তাঁর লিখিত চিঠির বাইরে একটি কথাও প্রকাশ্যে কোথাও বলেননি। ১০০ দিনের শ্রমিকদের পাওনা মিটিয়ে দেওয়ার দাবিতে রাজভবনের সামনে তৃণমূলের ধরণা চলার সময়ে বঙ্গ বিজেপির একাংশ চায়নি রাজ্যপাল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনায় বসুন। উলটে নানাভাবে বঙ্গ বিজেপি চেয়েছিল, কলকাতায় না ফিরে রাজ্যপাল বাইরেই থাকুন। কিন্তু সি ভি আনন্দ বোস তৃণমূলের দাবির সঙ্গে একমত হয়ে অভিষেকের সঙ্গে দেখা করে একদিকে তিনি যেমন স্মারকলিপি গ্রহণ করে কেন্দ্রকে পাঠান, অন্যদিকে, নিজের বক্তব্যও স্পষ্ট করে দিল্লিকে যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে ১০০ দিনের পাওনা মিটিয়ে দিতে সুপারিশ করেছেন।